২ সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে

যদিও বছরের এই সময়ে সবজির দাম কম থাকার কথা, তবে এবারের চিত্র ভিন্ন।
শীতেও সবজির দাম চড়া
সিলেটের কানাইঘাট চর বাজারে বুধবার আশেপাশের গ্রাম থেকে আনা সবজি নৌকা থেকে নামানো হচ্ছে। চাষিরা আকার ভেদে প্রতিটি ১০০ ফুলকপি চার থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। বাজারে শীতের সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। কারণ হিসেবে সরবরাহ ঘাটতির কথা বলছেন সবজি ব্যবসায়ীরা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

শীতের ভরা মৌসুমেও গত দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোতে প্রায় সব সবজির দাম বেড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে ভোক্তারা।

যদিও বছরের এই সময়ে সবজির দাম কম থাকার কথা, তবে এবারের চিত্র ভিন্ন।

গতকাল ঢাকার কারওয়ান বাজার, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কচুক্ষেত ও ইব্রাহিমপুরের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ৭০-১০০ টাকা, মটরশুঁটি ৬০-১০০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, করলা ৮০-১২০ টাকা, আলু ৫৫-৬০ টাকা ও পেঁয়াজ (দেশি) ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে ফুলকপি পিসপ্রতি ৪০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা ও লাউ প্রতি পিস ৭০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম কেজিতে অন্তত ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

কৃষকদের বরাত দিয়ে সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সবজি রপ্তানি ও ফসল কাটা ব্যাহত হয়েছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সবজির সরবরাহ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

সবজি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত বগুড়ার শেরপুরের মাঠপর্যায়ের এক কৃষি কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, শ্রম ব্যয় এবং সার ও বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচের ওপরও প্রভাব পড়েছে।

ঢাকার ইব্রাহিমপুর কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম দুই থেকে তিনগুণ বেশি।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছর এই সময়ে ২০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।'

মুরগি ও ডিমের দামও বেড়েছে। গতকাল ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকা কেজি ও সোনালি মুরগি ৩০০-৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বেশি।

এসব কাঁচাবাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৩৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা বেশি।

দামবৃদ্ধির কারণে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিম্ন ও স্থায়ী আয়ের মানুষের। মূল্যবৃদ্ধির পর আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখতে তাদের এখন পরিমাণে কম কিনতে হচ্ছে।

কচুক্ষেত বাজারে কথা হয় এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বছর এই সময়ে ১০০ টাকায় পাঁচ কেজি আলু, ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ ও ১৫০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি কিনেছিলাম। কিন্তু এই বছর সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, দাম বেড়ে যাওয়ায় তিনি সবজি কেনা কমাতে বাধ্য হয়েছেন।

পূর্ব রাজা বাজারে একটি হোস্টেল পরিচালনা করেন আবু সাঈদ। ডেইলি স্টারকে তিনি জানান, গত মাসে ৫০ জনের একদিনের খাবারের জন্য দুই হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে তিনি সবজি, মাছ, মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারতেন। এখন একই পরিমাণ পণ্য কেনার জন্য তাকে আরও বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে।

'ব্যবসা থেকে উপার্জন করে আমার চার সদস্যের পরিবার চালাচ্ছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে এখন আমি ব্যবসায়ীদের কাছে ঋণী হয়ে পড়ছি', বলেন সাঈদ।

Comments

The Daily Star  | English

Extreme weather events threatening food security

Since May last year, Bangladesh faced more than a dozen extreme weather events -- four cyclones, nine incidents of floods, and multiple spells of heavy rains, heatwaves, and cold waves -- and now they threaten food security..These events not only harmed individual farmers and food security

55m ago