২০০৮ এর আগে দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না: নসরুল হামিদ

নসরুল হামিদ
নসরুল হামিদ। ফাইল ছবি

২০০৮ সালের আগে দেশের মাত্র ৪৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেতেন এবং সে সময় দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। এরপর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এবং আজ দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।

আজ সোমবার একটি ফেসবুক পোস্টে এ কথাগুলো বলেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

সারাদেশে চলমান ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন যখন গরমে হাঁসফাঁস করছে, তখন এ পরিস্থিতিকে 'অনাকাঙ্ক্ষিত' উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।

'তীব্র গরম এবং সেইসঙ্গে লোডশেডিংয়ের কারণে সবার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে' উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, 'এমন পরিস্থিতি কারোরই কাম্য নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং এর পেছনে বেশকিছু কারণ আছে, যা সবারই জানা প্রয়োজন।' 

তিনি বলেন, 'আপনাদের অজানা নয়, করোনা মহামারির ধাক্কা, পরবর্তীতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস অয়েলসহ সকল প্রকার জ্বালানির মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, সেইসাথে প্রাপ্যতা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যে সংকট এখনও চলমান।'

'অন্যদিকে, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে লাগামহীনভাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানি গ্যাস, কয়লা ও ফার্নেস অয়েল আমদানিতে অনেকটা প্রভাব পড়েছে। ফলে বর্তমানের এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং,' যোগ করেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা খুব দ্রুতই জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি। আশা করি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।'       

তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অবিচল নেতৃত্বে দিনরাত পরিশ্রম করে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। ২০০৮ সালেও মাত্র ৪৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেতেন, সেখানে আজ শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। যা বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় নজিরবিহীন ঘটনা। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে জাতীয় অর্থনীতি ও সকল ধরণের উৎপাদনে অভাবনীয় গতি এসেছে। এতে দেশজুড়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিগত এক যুগে আমরা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি ৫ গুণেরও বেশি।'

বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ''উৎপাদন সক্ষমতার দিক থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের নজিরবিহীন ঊর্ধ্বগতির কারণেই আমরা এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছি।'

'আমি সর্বোপরি আপনাদের ভোগান্তিতে দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসাথে আশ্বস্ত করতে চাই, এ পরিস্থিতি সাময়িক। খুব দ্রুতই আমরা ভালো অবস্থায় ফিরে আসব,' বলেন তিনি।  

নসরুল হামিদ আরও বলেন, 'অনেকের মনে থাকবার কথা ২০০৮ সালের আগে সারাদেশে দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই কঠিন সময় পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আশা করি আপনাদের সেই আস্থা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। সবাই মিলে আমরা দ্রুততম সময়ে এই ভোগান্তি পাড়ি দিতে সমর্থ হব।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Govt to procure potato directly from farmers this year

The agricultural adviser visits BADC’s cold storage, central seed testing laboratory, and vegetable seed processing centre

1h ago