২ বছর পর আবার উন্মুক্ত হচ্ছে চট্টগ্রামের জাতিসংঘ পার্ক

চট্টগ্রামের জাতিসংঘ পার্ক। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার
চট্টগ্রামের জাতিসংঘ পার্ক। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার

সংস্কার প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার প্রায় তিন মাস পর আজ শুক্রবার বিকেলে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হতে চলেছে চট্টগ্রামের জাতিসংঘ পার্ক।

তবে শুরুতে পার্কটি প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য খোলা থাকবে, কারণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পার্কটি দেখাশোনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের অনুমোদন এখনো দেয়নি। 

যতদিন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই পার্কের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের অনুমোদন না দিচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এর দেখাশোনার জন্য কর্তৃপক্ষ অন্যান্য পার্ক থেকে কিছু কর্মীকে নিয়ে এসে দায়িত্ব দিয়েছে।  

এই পার্কের কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত বিভাগের (পিডব্লিউডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর্মী স্বল্পতার কারণে পার্কটি প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন তিন ঘন্টা খোলা থাকবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আজ সকালে পার্কটি উদ্বোধন করবেন বলে পিডব্লিউডির চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এর আগে সংস্কার প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও পার্কটি কয়েক মাস বন্ধ রাখা হয়েছিল।

পার্ক কীভাবে খোলা হবে এবং কে এর উদ্বোধন করবেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনার অভাবে পার্ক খোলার বিষয়টি স্থগিত থাকে।

যার ফলে এই পাবলিক পার্কের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল সাধারণ মানুষ।

এ বিষয়ে পিডব্লিউডি, চট্টগ্রাম (বিভাগ-১) এর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'সকালে পার্কটি উদ্বোধনের পর শুক্রবার বিকেলে আমরা এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেব। প্রাথমিকভাবে পার্কটি প্রতিদিন বিকাল তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা খোলা থাকবে।'

পার্ক স্বল্প সময়ের জন্য কেন খোলা থাকবে জানতে চাইলে কামরুল বলেন, কর্মী সংকটের কারণে পার্কটি প্রতিদিন বেশি সময় খোলা রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, 'আমরা ২১ জন কর্মী নিয়ে পার্কের জন্য জনবল স্থাপনের জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছি। আমরা জনবল নিয়োগের অনুমোদনের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।'

তিনি আরও জানান, মন্ত্রণালয় এখনও জনবলের অনুমোদন দেয়নি।

'তাই, প্রাথমিকভাবে আমরা চট্টগ্রামের গণপূর্ত বিভাগ পরিচালিত অন্যান্য পার্ক থেকে জনবল নিয়ে পার্কটি চালু করছি', যোগ করেন তিনি।

'আমরা এই পার্ক দেখাশোনার জন্য প্রাথমিকভাবে চার কর্মীকে দায়িত্ব দিয়েছি', তিনি বলেন, এই পার্কের দেখাশোনার জন্য অন্যান্য পার্ক থেকে কিছু কর্মী আনা হয়েছে, এতে করে সেই পার্কগুলো পরিচালনা করতেও বেশ সমস্যায় পড়তে হবে।

এদিকে দীর্ঘদিন পর পার্কটি আবার চালু হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।

কাতালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মিল্টন দাশ বলেন, 'পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, শুলকবহর, মির্জারপুল, প্রবর্তক, সুগন্ধা ও মুরাদপুর এলাকায় আর কোনো পার্ক নেই, তাই এসব এলাকার লোকজন  অবসর বিনোদনের জন্য এই পার্কে আসতেন।'

'প্রায় ছয় বছর ধরে পার্কটি দুঃখজনক অবস্থায় থাকায় আমরা এখানে সময় কাটানো থেকে বঞ্চিত ছিলাম', তিনি বলেন, 'আমরা খুশি যে সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার পর এই পার্কটি উন্মুক্ত হচ্ছে এবং আমরা আবারো এই সুযোগটি ফিরে পাব।'

পাঁচলাইশ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল এই পার্কটি সকাল-সন্ধ্যা খোলা রাখার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল মঞ্জুর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় অবস্থিত জাতিসংঘ পার্কটি বন্দর নগরীর কয়েকটি পার্কের মধ্যে একটি, যেখানে মানুষের উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে।

৫৯ বছর আগে স্থাপিত এই পার্ক দুই দশমিক ১৭ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত।

পার্কের সংস্কার কাজ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়। কর্মকর্তারা জানান, জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এটি সেপ্টেম্বরে শেষ হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
July charter implementation

July charter implementation: What notes of dissent could mean

The July National Charter, finalised after weeks of consensus talks, faces a delicate challenge over notes of dissent, most of them from the BNP and its allies.

16h ago