বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা

বন বিভাগের স্থাপন করা ক্যামেরায় বাঘ। ছবি: বন বিভাগ থেকে নেওয়া

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের সংরক্ষণ প্রচেষ্টা সফল হওয়ায় বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে, এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

চলমান বাঘ শুমারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ক্যামেরার মাধ্যমে সুন্দরবনের এমন জায়গায় বাঘ দেকতে পেয়েছেন যেখানে আগের জরিপে বাঘ দেখা যায়নি।

বনের ভেতরে স্থাপন করা ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানান তারা।

তবে, তারা সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলতে পারেননি।

এই বাঘ শুমারির ফলাফল ২০২৪ সালে প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২০১৫ ও ২০১৮ সালে পরিচালিত সমীক্ষায় খুলনা রেঞ্জের কিছু অংশে কোনো বাঘ পাওয়া যায়নি।

কিন্তু এবার ক্যামেরায় শাবকসহ প্রাপ্তবয়স্ক বাঘ দেখা গেছে। স্থানীয় ও বন কর্মকর্তারাও ঘন ঘন বাঘের দেখা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

সুন্দরবনে যাওয়া পর্যটকরাও বাঘ দেখছেন।

গত ১২ মার্চ সুন্দরবনের মংলা প্রান্তে একটি পর্যটন এলাকায় ৪টি বাঘ দেখা যায়।

এ ছাড়া জেলেদের ওপর বাঘের আক্রমণও বেড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বর্তমান বাঘ শুমারির আওতায় খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

২০২৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জেও ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।

সবমিলিয়ে মোট ৬৬৫টি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।

খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক আবু নাসের মহসিন হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এখনো যাচাই করা হয়নি। ২টি রেঞ্জে কতটি বাঘ রয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। জরিপ করে সব রেঞ্জ থেকে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করার পর ২০২৪ সালে বাঘ শুমারির ফলাফল প্রকাশ করা হবে।'

'মানুষের আঙুলের ছাপের মতো বাঘের গায়ের ডোরাকাটারও ভিন্নতা আছে। তা বিশ্লেষণ করেই বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে', বলেন তিনি।

এই বন কর্মকর্তা আরও বলেন, 'শিকারিদের বিরুদ্ধে বন বিভাগের বর্ধিত সতর্কতা ও বাঘের প্রতি স্থানীয়দের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণেই বাঘের সংখ্যা প্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।'

'এ ছাড়া, বনে হরিণ ও বুনো শূকরের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বাঘের জন্য পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করছে।'

তিনি আরও বলেন, 'বাঘের শিকার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সরকারের সিদ্ধান্তও বাঘের প্রতি স্থানীয়দের মনোভাব পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছে।'

সরকারের 'সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প' 2025 সালের মার্চের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, বাঘ শুমারির কার্যক্রম ২০২৪ সালে শেষ হবে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে বনভূমি ৪ হাজার ৮৩২ এবং জলাভূমি ১ হাজার ১৮৫ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৯৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই বনভূমির স্থলে ২৮৯ প্রজাতির প্রাণীর বসবাস। এ ছাড়া ২১৯ প্রজাতির জলজ প্রাণী বাস করে।

১৯৮২ সালে পরিচালিত প্রথম বাঘ শুমারিতে সুন্দরবনে অন্তত ৪৫৩টি বাঘ পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৩ সালে ১০৬টি ও ২০১৮ সালে ১১৪টি বাঘ পাওয়া গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Govt declares 10-day Eid holiday starting June 5

Offices to remain open on two weekly holidays— May 17 and 24—to offset Eid vacation

2h ago