লালমনিরহাটে তিস্তার ১২ পয়েন্টে অবৈধ বালু উত্তোলন

লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর অন্তত ১২ স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। গত ২ মাস ধরে তথা শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা থেকে বালু তোলা হচ্ছে। বালু বিক্রি করতে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
অবৈধ বালু উত্তোলন
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধান এলাকায় তিস্তা থেকে বালু তুলে ট্রাক্টরে পরিবহন করা হচ্ছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর অন্তত ১২ স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। গত ২ মাস ধরে তথা শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা থেকে বালু তোলা হচ্ছে। বালু বিক্রি করতে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু তুলে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ট্রাক্টরে বালু পরিবহন করে পাঠানো হচ্ছে অন্যস্থানে।

এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে নদীভাঙনে পড়তে হয় তাদের।

নদীপাড়ের মানুষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধান এলাকায় তিস্তা থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন।

আদিতমারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার বালু তোলার ড্রেজার ও বালু পরিবহনের ট্রাক্টর জব্দ করেছেন। তিনি সেসময় ট্রাক্টর ও ড্রেজার মালিকের দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন।

অবৈধ বালু উত্তোলন
আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধান এলাকায় তিস্তার বালু ট্রাকে তোলা হচ্ছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

সরেজমিনে দেখা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা, রাজপুর ও খুনিয়াগাছ; আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধান, কুটিরপাড় ও বালাপাড়া; কালীগঞ্জ উপজেলার চর বৈরাতি ও ভোটমারী; হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা, পারুলিয়া ও সানিয়াজান এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম এলাকায় তিস্তা থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে।

চর গোবর্ধান এলাকায় তিস্তাপাড়ের মানুষের অভিযোগ—যারা বালু তুলছেন তারা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। কেউ প্রতিবাদ করলে নানাভাবে হয়রানী করা হয়। শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি হয়রানীমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রশাসন বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই আবার বালু তোলা শুরু হয় বলেও গ্রামবাসীরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান।

চর গোবর্ধান এলাকার নদী ভাঙনে শিকার মোলেম মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অবৈধভাবে তিস্তা থেকে বালু তোলার কারণে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। এ কারণে বসতভিটা-আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদীভাঙনে অসংখ্য পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলা ভাঙনের অন্যতম কারণ।'

ইউএনও জি আর সারোয়ার আরও বলেন, 'অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। যারা বালু তুলছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সচেষ্ট আছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago