পাহাড় কাটায় চসিকের প্রকৌশলী, কাউন্সিলরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পাহাড় কাটা
চট্টগ্রামে আকবরশাহে বেলতলি ঘোনা এলাকায় পাহাড় কাটা। ফাইল ছবি সংগৃহীত

চট্টগ্রামে আকবরশাহ থানার বেলতলি ঘোনা এলাকায় পাহাড় কাটার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৩ প্রকৌশলী, উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাছান আহম্মদ বাদী হয়ে আকবরশাহ থানায় মামলাটি করেন।

আসামিরা হলেন চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ-প্রকল্প পরিচালক জসিম উদ্দিন, সিনিয়র সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) ওয়ালী আহমেদ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এবি-হক ব্রাদার্সের মালিক ওমর ফারুক, তার স্ত্রী তাকিয়া বেগম, স্থানীয় কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম এবং স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসমাইল।

পরিবেশ অধিদপ্তরের (চট্টগ্রাম মহানগর) পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস জানান, ৭ এপ্রিল বিকেলে আকবর শাহ থানার বেলতলী ঘোনায় কাটার সময় মাটি ধসে মজিবুর রহমান খোকা নামের একজন নিহত ও তিন জন আহত হন। সেসময় সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মতিন, হাছান আহম্মদ ও পরিদর্শক মো. মনির হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে জানা যায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই খাড়া ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড় কেটে সড়ক তৈরির কাজ চলছিল। সেখানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন, এরমধ্যে ৫ শ্রমিক পাহাড় ধসে চাপা পড়ে। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ৫০ হাজার ফুট পাহাড় কাটার সত্যতা পাওয়া যায়।

এর আগে ২৬ ডিসেম্বর একই স্থানে ১৩ হাজার ৩০০ ফুট পাহাড় কাটার প্রমাণ পায় পরিবেশ অধিদপ্তর। এর দায়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক) শুনানির জন্য নোটিশ দেয়া হয়। এরমধ্যে ৫ জানুয়ারি পাহাড় কাটা বন্ধে ওই পাহাড়ের মালিকানায় থাকা অগ্রণী ব্যাংক অফিসার্স কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের বিষয়ে ১০ জানুয়ারি এবং ৩১ জানুয়ারি শুনানি হয়। কিন্তু শুনানিতে চসিক ও চউকের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

এরমধ্যে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করে শাহজাহান নামে এক এক্সকেভেটর চালককে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়। 

হিল্লোল বিশ্বাস বলেন, 'সড়ক তৈরির জন্যে কোনো পাহাড় বা টিলা কাটা হবে কিনা বা কী পরিমাণ কাটা হবে বা পাহাড় ধস রোধে কোনো নিরাপত্তা দেয়াল তৈরি করা হবে কিনা এরকম কোনো তথ্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানায়নি চসিক। অনুমোদনও নেয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পাহাড় কেটে সড়ক তৈরিতে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই পাহাড় কাটার ফলে ৭ এপ্রিলের দুর্ঘটনা ছাড়াও বর্ষা মৌসুমে আরও ধসের আশঙ্কা রয়েছে৷ তাই ৭ জনকে আসামি করে সহকারী পরিচালক হাছান আহম্মদ আকবরশাহ থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।'

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাহাড় কাটার সাথে জড়িত প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও এই মামলার আসামি করা হবে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

10h ago