বরিশাল নগরীতে সরকারি পুকুর ভরাট, ‘উদাসীন’ পরিবেশ অধিদপ্তর

৩৩ শতাংশ পুকুরের তিন চতুর্থাংশই বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। ছবি: টিটু দাস/স্টার

বরিশাল নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল রোডে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এক পুকুর গত বৃহস্পতিবার থেকে বালু দিয়ে ভারাটের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ দিলেও, থামেনি পুকুর ভরাটের কাজ।

সরেজমিনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র ও একই অধিদপ্তরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেইনিং সেন্টার (নিপোর্ট) পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ৩৩ শতাংশ পুকুরের তিন চতুর্থাংশই বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে।

স্থানীয় এক দোকানদার জানান, বৃহস্পতিবার সারারাত পুকুর ভরাট করা হয়েছে। দেয়াল ভেঙে ট্রাক দিয়ে বালু এনে ভরাটের কাজ চলেছে।  

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ও স্থানীয় ভূমি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া আলেকান্দা মৌজায় ৩৩ শতাংশ জমিটি পুকুর হিসেবে দেখানো হলেও জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে সেটিকে নিচু জমি দেখিয়ে ৫তলা ভবন নির্মাণের জন্য তড়িঘড়ি করে ভরাটের কাজ চলছে।

বরিশাল আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অফিস প্রধান মো. শওকত আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জমিটি আমাদেরই ছিল, গত বছর সমঝোতার ভিত্তিতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। জমিটি দেওয়ার সময় আমরা এটিকে পুকুর হিসেবেই উল্লেখ করেছিলাম।'

বরিশাল জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে একটি ৫তলা ভবন হবে। যেখানে ৫০ বেডের হাসপাতাল ছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও সদর উপজেলা ভবন নির্মিত হবে।'

তিনি বলেন, 'পুকুর নয়, জায়গাটি নিচু এলাকা হিসেবে রয়েছে। এখানে এখন পুকুরের অস্তিত্ব কি আছে?'

জমির সব কাগজে পুকুর হিসেবে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও এখানে প্রজেক্ট কীভাবে হচ্ছে? জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, 'আমি এক বছর হয়েছে এখানে জয়েন করেছি, এর আগেই এই প্রজেক্টের সব কাজ হয়েছে। এর সঙ্গে মন্ত্রণালয় রয়েছে, আমার আর কিছু বলার নেই।'
 
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা ) বরিশালের সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরিবেশ আইন ২০০০ ও সংশোধিত ২০০৫ অনুসারে- কোনো পুকুর বা জলাশয় ভরাট দণ্ডনীয় অপরাধ, এমনকি নিজ সম্পত্তি হলেও তা করা যাবে না। আমরা এই পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছি। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযোগ পেয়ে উদাসীন থাকায় পুকুরটি ভরাটের কাজ চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত নোটিশ করা দরকার হলেও পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।'

পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক এ এইচ রাশেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটি জেলা কার্যালয়ের দেখার কথা।'

বরিশাল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামাল মেহেদী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযোগ পেয়ে আমাদের অফিসের স্টাফ রফিক মিয়াকে সরেজমিনে পাঠিয়েছি এবং সেখানে কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে।'
 

Comments

The Daily Star  | English
Starlink logo

BTRC approves licence for Starlink

This is the swiftest recommendation from the BTRC for any such licence, according to a BTRC official.

8h ago