রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবি

'সুন্দরবন বিধ্বংসী' কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র অবিলম্বে বন্ধ এবং জলবায়ু ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার দাবিতে মোংলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্লোবাল ডে অব অ্যাকশন কর্মসূচি। বক্তারা ফসিল ফুয়েল নির্ভরতা থেকে বের হয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সরকারি বিনিয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ শনিবার সকালে মোংলার মিঠাখালী বাজারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে একটি সাইকেল র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচির আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার।
কানাডার জি-সেভেন সম্মেলন, জার্মানিতে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক বৈঠক এবং স্পেনে উন্নয়ন বিষয়ক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সকাল ১০টায় সাইকেল র্যালির উদ্বোধনী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন 'সুন্দরবন রক্ষায় আমরা'র নেতা মো. নাজমুল হক। বক্তব্য রাখেন ধরার নেতা মো. জানে আলম বাবু, মো. হাছিব সরদার, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের মারুফ বিল্লাহ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের স্বেচ্ছাসেবক মেহেদী হাসান বাবু, ছাত্রনেতা শেখ সিফাতুল্লাহ শুভ, মঈন গাজী ও আরাফাত আমিন দূর্জয়।
বক্তারা বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্প বাতিল করে মানুষের প্রয়োজন ও অধিকারকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ করতে হবে। উন্নয়ন মানে শুধুমাত্র মুনাফা নয়, বরং তা হওয়া উচিত মানুষের উপকারে।
ধরা'র নেতা মো. জানে আলম বাবু বলেন, 'জলবায়ু অর্থায়নে ধীরগতি নয়, বরং তা নিশ্চিত করতে হবে এখনই। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করো, পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে বিনিয়োগ করো।'
মো. হাছিব সরদার বলেন, 'ধনীদের স্বার্থে নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবন ও পরিবেশ রক্ষায় বিনিয়োগ চাই। জনগণের অধিকার ও ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।'
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মো. নাজমুল হক বলেন, 'পৃথিবীকে রক্ষা করতে হলে আমাদের এখনই জেগে উঠতে হবে। ন্যায়বিচার ও অধিকারের জন্য লড়াই করতে হবে।'
গ্লোবাল ডে অব অ্যাকশন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি প্রসঙ্গে সুন্দরবন রক্ষায় আমরা'র সমন্বয়কারী মো. নূর আলম শেখ সাংবাদিকদের বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনকে মানবাধিকার ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সুন্দরবন সংলগ্ন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এই প্রকল্প এখনই বন্ধ করা জরুরি।'
তিনি আরও বলেন, 'ঋণ নয়, আমরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ চাই। লবণাক্ততা, নদীভাঙন ও ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে হলে বিশ্বসম্পদকে জবাবদিহিতার ভিত্তিতে গ্লোবাল সাউথ ও নর্থের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণভাবে বণ্টন করতে হবে।'
বক্তারা বলেন, সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি বৈশ্বিক জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেই এই ধরনের কর্মসূচি সময়োপযোগী। এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, যতদিন না সত্যিকার অর্থে মানুষের কথা গুরুত্ব পায় জলবায়ু নীতিতে।
Comments