আমদানিতেও ঝাঁঝ কমেনি, কাঁচা মরিচের কেজি এখন ৮০০ টাকা

স্টার ফাইল ফটো

ঈদের আগে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকা কাঁচা মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এতে দ্রুত কাঁচা মরিচের দাম কমে আসবে বলে ধারণা করেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সরকারের সেই উদ্যোগের সুফল এখনো মেলেনি।

ঈদের তৃতীয় দিন শনিবার দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতি কেজি কাঁচামরিচ সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ ঈদের আগের দিনও এর দাম ছিল সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দ্য ডেইলি স্টার সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য অনুসারে, আজ বাগেরহাটের বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৮০০ টাকা। ঝিনাইদহের শৈলকূপা ও জামালপুরেও ছিল একই দাম। এর বাইরে মরিচ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত পাবনার বিভিন্ন বাজারে ৭০০ টাকা, ফরিদপুরে ৭০০-৭৫০ টাকা, চট্টগ্রামে ৬০০-৭০০ টাকা, বগুড়ায় ৪৮০ টাকা, রাজশাহীতে ৫০০-৫৫০ টাকা, রাজবাড়ীতে ৬০০-৬৫০ টাকা, বরিশালে ৬০০ টাকা ও মৌলভীবাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কোরবানির ঈদের আগে ঢাকার খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় ওঠে, যে পণ্যের দাম সাধারণত ১০০ টাকার আশেপাশে থাকে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ জুন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দিনেই ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে ১১ হাজার ৬০০ টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার।

বিভিন্ন জেলার মরিচচাষি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এপ্রিল ও মে মাসে খরার পর হঠাৎ অতিবৃষ্টিতে বেশির ভাগ মরিচগাছ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে অধিকাংশ গাছে ফলন নেই বললেই চলে। এর ওপর টানা বৃষ্টিতে মরিচ সংগ্রহের কাজটি কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে সরবরাহ ঘাটতিতে অধিকাংশ জায়গায় কাঁচা মরিচের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।

অবশ্য কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের মনে করেন, 'এত কিছু সত্ত্বেও কাঁচা মরিচের কেজি ৭০০-৮০০ টাকা হওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। এখানে অবশ্যই সিন্ডিকেটের কারসাজি আছে। এর আগে পেঁয়াজসহ অন্য নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রেও আমরা এমনটা দেখেছি।'

আজ বাগেরহাটের কয়রা সাইনবোর্ড এলাকার কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী অমিত দে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দাম অনেক বেশি, তাই ২ দিন ধরে কাঁচা মরিচ বিক্রি বন্ধ রেখেছি। ১০০ গ্রাম মরিচ বেচতে হচ্ছে ৮০ টাকায়।'

পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলা কাঁচা মরিচ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত। সেখানেও আজ পাইকারিতে প্রতি কেজি মরিচের দাম ৬০০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৭০০ টাকার বেশি।

ফরিদপুর শহরের হাজি শরিয়াতুল্লাহ বাজারের আড়তে প্রদতি কেজি মরিচ ৫৬০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা যায়। এই মরিচই শহরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয় ৭০০-৭৫০ টাকার মধ্যে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সবজি ব্যবসায়ী আরিফ মিয়া জানান, সেখানে আজ খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ অবস্থায় দাম অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় সেখানে নাগা মরিচের চাহিদা বেড়ে গেছে।

একইভাবে টানা বৃষ্টিতে খেতের মরিচ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ঈদের ছুটিতে সরবোহ ঘাটতির কারণ দেখিয়ে বরিশালেও আজ প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকায়।

অবশ্য সেখানকার ক্রেতাদের ভাষ্য, জোগান কম থাকায় এত দাম বাড়িয়েছে অতি মুনাফালোভীরা।

 

Comments

The Daily Star  | English
Israeli strikes on Iran 2025

Israel launches major attack on Iran: what we know so far

‘Nuclear plant, military sites’ hit; strikes likely killed Iranian chief of staff, top nuclear scientists; state of emergency declared in Israel, fearing Iranian retaliation

6h ago