৮ বছরেও চালু হয়নি হাসপাতালের আইসিইউ, ব্যবহারের আগেই নষ্ট

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে বন্ধ আইসিইউ। ছবি: স্টার

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) উদ্বোধনের পর আট বছর পেরিয়ে গেলেও চালু করা যায়নি। অব্যবহৃত অবস্থায় থেকে নষ্ট হয়ে গেছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, হৃদরোগ সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম ২০১৫ সালে ৩১ জানুয়ারি হাসপাতালে আইসিইউ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।

আট বছর পার হলেও প্রশিক্ষিত জনবল ও পর্যাপ্ত পরীক্ষা সুবিধার অভাবে আইসিইউ মেশিন চালু করা যায়নি।

এতে করে হার্ট অ্যাটাকসহ গুরুতর হার্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসা রোগীদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ঢাকার যেকোনো হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ভাগ্যবশত, কিছু রেফার্ড করা রোগী হাসপাতালের পথেই মারা যান।

সরিষাবাড়ী উপজেলার সোলাইম কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার বাবাকে ২০১৯ বুকে তীব্র ব্যথা নিয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

ওই হাসপাতালেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া গেলে হয়তো সেদিন তার বাবা বেঁচে থাকতেন, বলেন তিনি।

কথা বলে জানা যায়, উদ্বোধনের পর থেকে আট বছর যাবত আইসিইউ কক্ষটি তালাবদ্ধ অবস্থাতেই আছে।

গত এপ্রিলে ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তারা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং দুটি মেশিনের মধ্যে একটিকে সম্পূর্ণ ব্যবহার অযোগ্য ঘোষণা করেন এবং জানান মেরামত করার পরে আরেকটি মেশিন চালু করা যেতে পারে, তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

আইসিইউর দায়িত্বরত নার্স লাভলী আক্তার বলেন, আমি প্রতিদিন সকালে ডিউটি করতে আসি এবং আড়াইটা পর্যন্ত এখানে থাকি। কিন্তু উদ্বোধনের পর এখানে কোনো রোগীর চিকিৎসা হয়নি।

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, 'প্রয়োজনীয় জনবল ও চিকিৎসা যন্ত্রের স্বল্পতার কারণে আইসিসিইউর কার্যক্রম এখনো শুরু করা যায়নি। সম্প্রতি তা ব্যবহারের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।'

সংকটের কথা স্বীকার করে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ওয়ার্কশপের (এনইএমইও) কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার জন্য আইসিইউ মেশিনটি ধ্বংস করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা বারবার লিখিতভাবে তাদের জানিয়েছি কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি।'

ফলে লাইফ সাপোর্ট ভেন্টিলেটর, মনিটরসহ সব আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় বিছানা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আইসিইউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

4h ago