কেপটাউনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক

পশ্চিমের আধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চায় ব্রিকস

ব্রিকসের ২০১৮ সালের সম্মেলনের পোস্টার ও লোগো। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ব্রিকসের ২০১৮ সালের সম্মেলনের পোস্টার ও লোগো। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা—এই ৫ দেশের জোট ব্রিকস-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দক্ষিণ আফ্রিকায় বৈঠক করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, জোটটি মূলত পশ্চিমের দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

আগামী ২২ আগস্ট জোহানসবার্গে এই জোটের মূল সম্মেলন আয়োজিত হবে। সে সম্মেলনের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কেপটাউনে বৈঠক করছেন।

আগস্টের সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যোগ দিতে পারার সম্ভাবনায় বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধী আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রযোজ্য আছে।

গত মার্চে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত এলাকা থেকে শিশুদের জোর করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আনা হয়। এটি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত। মস্কো এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই অভিযোগ আসার আগেই, গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা রুশ প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানায়।

আজ বৃহস্পতিবার কেপটাউনের বৈঠকে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যোগ দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কর্তৃপক্ষ। চীনের প্রতিনিধিত্ব করবেন একজন উপমন্ত্রী।

বৈঠকের আলোচনা সূচি প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন—বর্তমান সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ও জোট সম্প্রসারণের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

শুরু থেকে খুব একটি সক্রিয় না থাকলেও সম্প্রতি ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগে চীন ও রাশিয়ার প্রভাব আছে বলে জানা গেছে।

পশ্চিমের বিধিনিষেধের সঙ্গে মানিয়ে চলতে ব্রিকস এর নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক রুশ প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ রেখেছে। এ ব্যাংকটির ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়েও আজ আলোচনা হতে পারে বলে দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানিয়েছেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক বিভাজনের প্রেক্ষাপটে ব্রিকস নেতারা জানিয়েছেন, তারা তেল উৎপাদনকারী দেশসহ নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহী।

কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে ভেনেজুয়েলা, আর্জেন্টিনা, ইরান, আলজেরিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ব্রিকস এর সদস্য হতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন বা ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

তবে আগস্টের ২২ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৩ দিনের সম্মেলনে আইসিসির ঘোষণায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

আইসিসির অন্যতম সদস্য হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর পুতিনকে গ্রেপ্তার করার চাপ থাকবে, যদি তিনি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পুতিন এখনো যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। ক্রেমলিন জানিয়েছে, রাশিয়া 'সুষ্ঠুভাবে' অংশগ্রহণ করবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থান সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। প্রিটোরিয়া জানিয়েছে, তারা আইসিসির সদস্যপদের বাধ্যবাধকতার প্রতি সম্মান জানাবে। তবে সরকার এখনো প্রেসিডেন্ট পুতিনকে স্বাগত জানানোর বা সম্মেলনটি চীনে স্থানান্তর করার বিষয়টি বিবেচনা করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক নিক বোরেইন গণমাধ্যমকে জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ব্রিকস এর প্রতি সমর্থন ও রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বের কারণে পশ্চিমের মিত্রদের রোষানলে পড়ার আশংকায় থাকবে।

'দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে যদি পুতিন না আসার সিদ্ধান্ত নেন,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

9h ago