মার্কিন-চীন সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে একমত শি-ব্লিঙ্কেন

সোমবার বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন। ছবি: রয়টার্স
সোমবার বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ২ দিনের চীন সফরের শেষ দিনে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে উভয় পক্ষ ২ দেশের সম্পর্ককে স্থিতিশীল করার অঙ্গীকার করেছে, যাতে কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয়।

গতকাল সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ব্লিঙ্কেনের সফর ইতিবাচক হলেও এ থেকে বড় কোনো অর্জন নেই।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং 'গ্রেট হল অব দ্য পিপল' সম্মেলন কেন্দ্রে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং বৈঠক থেকে আসা 'অগ্রগতিকে' স্বাগত জানান। সাধারণত অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান চীনে আসলে এই সম্মেলন কেন্দ্রে দেখা করেন শি।

বিশ্বের শীর্ষ ২ অর্থনৈতিক শক্তিধর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কোনো সংঘাত দেখা দিলে তা অন্যান্য দেশের ওপর প্রভাব ফেলবে—বিষয়টি মেনে নিয়ে শি ও ব্লিঙ্কেন স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দেন।

সোমবার বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন। ছবি: রয়টার্স
সোমবার বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম চাওয়া ছিল ২ দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে 'হট লাইনের' মাধ্যমে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।

চীন এই প্রস্তাব নাকচ করে জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বিধিনিষেধ বাধা সৃষ্টি করছে।

অন্যান্য কিছু বিষয়ে নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থেকেছে ২ পক্ষ। যেমন—তাইওয়ান, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, চীনের সেমিকন্ডাক্টর খাতের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব, মানবাধিকার ও ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন।

গতকাল দিনের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, তার ধারণা ২ দেশের সম্পর্ক সঠিক পথে এগোচ্ছে। তার মতে, ব্লিঙ্কেনের সফর সফল ও ইতিবাচক ছিল।

এ বিষয়ে বাইডেন আরও বলেন, 'ব্লিঙ্কেন দারুণ কাজ করেছেন।'

বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই মার্কিন-চীন সম্পর্কে অগ্রগতির সবচেয়ে বড় নিদর্শন। তবে কীভাবে দেশ ২টি নানা বিষয়ে তাদের মতপার্থক্য দূর করবে, তা এই সফর থেকে পরিষ্কার হয়নি।

২ দেশ কূটনীতিকদের যোগাযোগ অব্যাহত রাখার ও আগামী দিনগুলোয় তাদের একে অন্যের দেশে সফর অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে।

২ দিনের সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন জানান, এই সফর থেকে ওয়াশিংটনের সব লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ছিল উদ্বেগের বিষয়গুলো সরাসরি জানানো, আলোচনার জন্য কূটনীতিক চ্যানেল স্থাপন ও পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করা।

ব্লিঙ্কেন আরও জানান, বেইজিংয়ে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে তিনি 'খোলাখুলি ও গঠনমূলক' আলোচনা করেছেন।

সম্পর্ক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি শি। তিনি ব্লিঙ্কেনকে বলেন, 'চীন একটি বলিষ্ঠ ও স্থিতিশীল চীন-মার্কিন সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে আশাবাদী' এবং তিনি বিশ্বাস করেন, ২ দেশ 'তাদের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠবে।'

শি ওয়াশিংটনকে 'চীনের বৈধ অধিকার ও স্বার্থহানি' না করার অনুরোধ জানান।

বিশ্লেষকদের মতে, এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি গণতান্ত্রিক ও স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তাইওয়ানকে চীন নিজ ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। অন্যদিকে, তাইওয়ান নিজের স্বাধীনসত্তা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর জোর দেয়।

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

8h ago