আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে গাজায় জাতিসংঘের সদরদপ্তর ধ্বংস করল ইসরায়েল

ইসরায়েল এই যুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে উপেক্ষা করছে। জাতিসংঘের অবকাঠামোর ওপর হামলার ঘটনাগুলো এর স্পষ্ট প্রমাণ
গাজা সিটিতে অবস্থিত ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংগঠন ইউএনআরডব্লিউএ'র সদরদপ্তরে হামলা চালিয়ে ভবনটি ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত
গাজা সিটিতে অবস্থিত ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংগঠন ইউএনআরডব্লিউএ'র সদরদপ্তরে হামলা চালিয়ে ভবনটি ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত

গাজা সিটিতে অবস্থিত ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংগঠন ইউএনআরডব্লিউএ'র সদরদপ্তরে হামলা চালিয়ে ভবনটি ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।  

আজ মঙ্গলবার ইউএনআরডব্লিউ প্রধান ফিলিপ লাজারিনির বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

এর আগে গত সপ্তাহে আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) জানিয়েছিল তারা এই ভবনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। আইডিএফ দাবি করে, এই ভবনের ভেতর সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে এবং কিছু কক্ষে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বাহিনী হামাস জিম্মিদের আটকে রাখে।

গত অক্টোবর ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর বারবার আক্রান্ত হয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ ভবন। ফাইল ছবি: এএফপি
গত অক্টোবর ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর বারবার আক্রান্ত হয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ ভবন। ফাইল ছবি: এএফপি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে লাজারিনি বলেন, 'এই ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। গাজায় ইউএনআরডব্লিউর সদরদপ্তর শুরুতে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয় আর এখন তা  ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। (গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক হামলার শুরু থেকেই) আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে উপেক্ষা করা হচ্ছে এবং এ ঘটনাটি এই অব্যাহত ধারার সর্বশেষ উদাহরণ। জাতিসংঘের অবকাঠামোগুলোকে সকল পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত রাখতে হবে। এগুলোকে কখনোই সামরিক বা যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করা চলবে না। সব যুদ্ধের কিছু নিয়ম থাকে। গাজার যুদ্ধও কোনো ব্যতিক্রম নয়।'

ইউএনআরডব্লিউএ'র মুখমাত্র তামারা আলরিফাই জানান, ইসরায়েল গাজায় গত সপ্তাহে বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে, যা এই যুদ্ধের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলার অন্যতম। এ ছাড়া, গাজা সিটিতে ইউএনআরডব্লিউর সদরদপ্তর ধ্বংসের মাধ্যমে ইসরায়েল প্রমাণ করেছে, তারা গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে কোন ধরনের আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা করছে না।

আল জাজিরাকে তামারা বলেন, '(গত ৭ অক্টোবর) গাজার যুদ্ধ শুরুর পর গত সপ্তাহটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহতম সপ্তাহের অন্যতম। ইউএনআরডব্লিউএর সদরদপ্তর থেকে যেসব ছবি আমরা পাচ্ছি, সেগুলো আমাদেরকে স্তম্ভিত করেছে।'

গাজা সিটিতে অবস্থিত ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংগঠন ইউএনআরডব্লিউএ'র সদরদপ্তরে হামলা চালিয়ে ভবনটি ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত
গাজা সিটিতে অবস্থিত ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংগঠন ইউএনআরডব্লিউএ'র সদরদপ্তরে হামলা চালিয়ে ভবনটি ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত

তিনি আরও জানান, ইসরায়েল এই যুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে উপেক্ষা করছে। জাতিসংঘের অবকাঠামোর ওপর হামলার ঘটনাগুলো এর স্পষ্ট প্রমাণ।

তিনি উল্লেখ করেন, 'গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ইউএনআরডব্লিউর ১৯০টি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়শিবির হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল। এই সংঘাতে ১৯০টি অবকাঠামো আক্রান্ত হয়েছে, এবং এসব আশ্রয়শিবিরের ভেতরে থাকা ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।'

তিনি জানান, যারা ইউএনআরডব্লিউর অবকাঠামোগুলতে আশ্রয় নিতে আসেন, তারা মনে করেন, 'তারা জাতিসংঘের ভবনে, জাতিসংঘের পতাকার নিচে আশ্রয় নিতে এসেছেন।'

তিনি আরও জানান, 'আন্তর্জাতিক আইনে সুরক্ষিত' এসব ভবনে হামলায় ৫০০ জনেরও বেশি নিহতের পাশাপাশি এক হাজার ৬০০ মানুষ আহতও হয়েছেন।

Comments