রাশিয়ার ১০ কিমি ভেতরে ঢুকে পড়েছে ইউক্রেনের সেনারা, বিশেষ প্রতিরোধ মস্কোর

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় হামলা ঠেকাতে রাশিয়া ট্যাংক মোতায়েন করেছে। ছবি: রয়টার্স
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় হামলা ঠেকাতে রাশিয়া ট্যাংক মোতায়েন করেছে। ছবি: রয়টার্স

টানা ছয়দিন ধরে রুশ ভূখণ্ডে অভিযান চালাচ্ছে ইউক্রেন। ২০২২ সালে আগ্রাসন শুরুর পর এবারই প্রথম মস্কোর ১০ কিমি ভেতরে ঢুকে পড়েছে ইউক্রেন। যার ফলে বিশেষ প্রতিরোধ ব্যবস্থা হাতে নিতে বাধ্য হয়েছে মস্কো।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গতকাল শনিবার প্রথমবারের মতো দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

জেলেন্সকি জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী রাশিয়ার পশ্চিমের কুরস্ক অঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে।

গতকাল স্থানীয় সময় শনিবার রাতে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, 'ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এই যুদ্ধকে আগ্রাসীদের অঞ্চলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।'

গতকাল শনিবার ওই হামলা পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার ভেতর ১০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়ে গেছে বলেও জানা যাচ্ছে।

রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের এই হামলা ছিল অপ্রত্যাশিত। তারা নিরাপত্তার জন্য সীমান্তের দুই পাশ থেকেই প্রচুর মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে।

কুরস্কের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৭৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম তাস।

কুরস্ক অঞ্চলের প্রতিরক্ষায় রাশিয়া ট্যাংক ও রকেট লঞ্চিং সিস্টেম পাঠিয়েছে।

তিন অঞ্চলে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে মস্কো। এ অঞ্চলগুলো হল ইউক্রেন সীমান্তবর্তী শহর কুরস্ক, বেলগোরদ ও ব্রিয়ানস্ক।

রাশিয়ার সুমি এলাকায় ইউক্রেনীয় সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স
রাশিয়ার সুমি এলাকায় ইউক্রেনীয় সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স

এসব অঞ্চলে কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে বেশ কিছু উদ্যোগ হাতে নিয়েছে, যার মধ্যে আছে যানবাহন ও নাগরিকদের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ এবং ফোনে আড়িপাতা।

রাশিয়া জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে এক হাজারেরও বেশি ইউক্রেনীয় সেনা কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশ করে। তাদের সঙ্গে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানও ছিল।

ইউক্রেনের বাহিনী বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করে নেয় এবং প্রাদেশিক শহর সুদজা দখলেরও সম্ভাবনা তৈরি করে।

আজ রোববার দিনের শুরুতেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও সুমি অঞ্চলে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিটস্চকো বলেন, শহরে বিমান হামলার বিষয়ে সতর্কতা দেওয়া হয়েছে এবং এ ধরনের হামলা ঠেকাতে কাজ করছে আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ইউনিট। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া পোস্টে তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার অনুরোধ করেন।

দেশটির বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কিয়েভ ও তার আশপাশের অঞ্চল এবং পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা জারি আছে।

শনিবারের ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনের 'যোদ্ধাদের' ধন্যবাদ দেন। বলেন, তিনি রাশিয়ায় অভিযান নিয়ে তাঁর দেশের জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার অলেকজান্ডার সিরস্কির সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

জেলেনস্কি আরও বলেন, 'ইউক্রেন প্রমাণ করেছে যে তারা ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং আগ্রাসীদের ওপর প্রয়োজনীয় চাপও সৃষ্টি করতে পারে।'

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরু করার পর রুশ ভূখণ্ডের এতটা ভেতরে আর কখনো যেতে পারেনি ইউক্রেনীয় বাহিনী।

যুদ্ধের শুরু থেকেই 'প্রতিরক্ষায়' ব্যতিব্যস্ত থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার রুশ ভূখণ্ডে হামলা ও অভিযানের চেষ্টা চালিয়েছে কিয়েভ।

Comments

The Daily Star  | English

What if India and China stop buying Russian oil?

Donald Trump is tightening sanctions loopholes that fund Moscow's war machine. What does a crackdown on Russia's oil trade mean for global markets — and economic heavyweights like China and India?

7h ago