এমপক্স: বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে সতর্কতা বাড়াল ভারত

এমপক্স ভাইরাস। ছবি: ডয়চে ভেলে
এমপক্স ভাইরাস। ছবি: ডয়চে ভেলে

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে সতর্কতা বাড়িয়েছে ভারত। মূলত, এই দুই দেশ থেকে আসা মানুষের দেহে এমপক্সের উপসর্গ রয়েছে কী না, তা ভালো করে নিশ্চিত হতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রধান সচিব পিকে মিশ্রর সভাপতিত্বে নয়াদিল্লিতে রোববার একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে এমপক্স নিয়ে দেশটির প্রস্তুতি ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয়।

১৪ আগস্ট বুধবার আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়া এমপক্সের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এ বিষয়ে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পৃথক বিবৃতিতে জানা গেছে, ২০২২ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১১৬ দেশে ৯৯ হাজার ১৭৬ জন মানুষ এমপক্সে (আগে মাঙ্কিপক্স বলে অভিহিত করা হোত) আক্রান্ত হয়েছেন এবং আক্রান্তদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ২০৮।

২০২২ সালেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমপক্সকে ঘিরে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। সে সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ভারতে ৩০জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি মতে, ২০২৩ সালের মার্চে সর্বশেষ এক ব্যক্তি এমপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন।

পিকে মিশ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের নয়াদিল্লি সংবাদদাতা জানিয়েছেন, এ বছর এখন পর্যন্ত ভারতে কেউ এমপক্সে আক্রান্ত হননি।

পর্যালোচনা মতে, এ মুহূর্তে ভারতে বড় আকারে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার ঝুঁকি নেই বললেই চলে।

বৈঠকে আরও জানানো হয়, সাধারণ এমপক্স সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তি দুই থেকে চার সপ্তাহ অসুস্থ থাকেন। উপযুক্ত চিকিৎসায় বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।

কঙ্গোর নাগরিক প্রিন্স বাহাতি এমপক্সে আক্রান্ত হয়ে নিরাগঙ্গো জেনারেল রেফারেন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছবি: এএফপি (১৭ আগস্ট, ২০২৪)
কঙ্গোর নাগরিক প্রিন্স বাহাতি এমপক্সে আক্রান্ত হয়ে নিরাগঙ্গো জেনারেল রেফারেন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছবি: এএফপি (১৭ আগস্ট, ২০২৪)

এমপক্স ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে। এমপক্স সংক্রমিত ব্যক্তিকে স্পর্শ করা, চুমু দেওয়া, যৌন সম্পর্ক থেকে এটি ছড়াতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের খুব কাছাকাছি থাকলে সংক্রমণ ঝুঁকি থাকে।

এমপক্স সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহার করা পোশাক, তোয়ালে, বিছানার চাদর, যেকোনো ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহার করা ইনজেকশনের সুঁই অন্য কারো শরীরে প্রবেশ করালেও এমপক্স হতে পারে।

এছাড়া, এমপক্স শুকিয়ে যাওয়ার পর ফোসকার আবরণ যদি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, সেখান থেকেও ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে।

বৈঠকে জানানো হয়, ভারতের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও অন্যান্য যেসব পথ দিয়ে বিদেশিরা আসতে পারেন, সেসব স্থানে স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ টিম মোতায়েন করা হয়েছে।

বৈঠকে পিকে মিশ্র নজরদারি বাড়াতে ও আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।

একইসঙ্গে তিনি এমপক্স পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।

আপাতত ভারতের ৩২টি পরীক্ষাগারে এমপক্স টেস্ট করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

তিনি এই রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার পদ্ধতি সম্পর্কে সবাইকে জানানোর নির্দেশ দেন।

দ্রুত এই রোগের উপসর্গ চিহ্নিত করতে প্রচারণা চালানোর ওপর জোর দেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Reforms, justice must come before election: Nahid

He also said, "This generation promises a new democratic constitution for Bangladesh."

40m ago