মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ: খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ বিদ্রোহীদের সঙ্গে এবার যোগ দিলো মুসলিমরা

মিয়ানমারে জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই চলছে। ছবি: রয়টার্স

প্রথমবারের মতো মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের দলে যোগ দিয়েছে একটি মুসলিম সামরিক ইউনিট। মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের তানিনথারিতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দেওয়া এই ইউনিটের নাম 'মুসলিম কোম্পানি'। 

আজ শনিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য। 

আল জাজিরা জানায়, মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন জাতীয় জোট (কেএনইউ) মূলত খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ অধ্যুষিত। সেখানে মুসলিম কোম্পানি যোগ দেওয়ায় বিদ্রোহ আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

মুসলিম কোম্পানির ইউনিটকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেএনইউর'র চতুর্থ ব্রিগেডের তৃতীয় ইউনিট দেওয়া হয়েছে। বিদ্রোহীদের ইউনিফর্ম পরলেও এই কোম্পানির সেনারা তাদের পোশাকে চাঁদ-তারা সম্বলিত একটি ব্যাজ পরে থাকে, যার উৎপত্তি অল বার্মা মুসলিম লিবারেশন আর্মি (এবিএমএলএ) থেকে। 

মিয়ানমারে বেশ কিছু জাতিসত্তার মুসলমান বাস করে। দেশটির পশ্চিমে রোহিঙ্গা মুসলিমরা বাস করে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারতীয় ও চীনা বংশোদ্ভূত মুসলমান রয়েছে। 'কামেইন' নামে আরেকটি মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের পূর্বপুরুষরা ১৭ শতকে আরাকানে আশ্রয় নেওয়া এক মুঘল রাজপুত্রের তীরন্দাজ বাহিনীর অংশ ছিল বলে ধারণা করা হয়। 

প্রায় সকল জাতি-গোষ্ঠীর মুসলিমই বর্তমান জান্তা সরকারের কাছে নিপীড়িত। জান্তা সরকার ও কট্টর জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, মিয়ানমারের দেশীয় বৌদ্ধ সংস্কৃতির জন্য মুসলমানরা হুমকিস্বরূপ। রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় নিপীড়নের পাশাপাশি কিছু মুসলিম গোষ্ঠীর নাগরিকত্বও অস্বীকার করেছে জান্তা সরকার। 

মিয়ানমারের বিশ্লেষক অ্যাশলি সাউথ আল জাজিরাকে বলেন, 'মিয়ানমারের মুসলমানরা খুবই নিপীড়িত। (জান্তা সরকার দ্বারা) তারাই সবচেয়ে বেশি সহিংসতার শিকার হয়। তবে কারেন অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে সাধারণত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনকে শান্তিতে বসবাস করতে দেখা যাচ্ছে। যে কারণে মুসলিম শরণার্থীদের একটি বড় অংশ কারেন-অধ্যুষিত অঞ্চলে আশ্রয় নিচ্ছে।'

মুসলিম কোম্পানির নেতা মোহাম্মদ আইশার আল জাজিরাকে জানান, কিছু অঞ্চলে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র তৈরি করতে চাইছে। তবে তানিনথারিতে কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর আধিপত্য নেই।  

'যতদিন সামরিক জান্তা ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন এ দেশের মুসলিম ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী নিপীড়িত হতে থাকবে,' বলেন আইশার। 

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

1h ago