রুশদির ‘স্যাটানিক ভার্সেসের’ নিষেধাজ্ঞা বাতিল ভারতের আদালতে

বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদি। ফাইল ছবি: এএফপি
বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদি। ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাজ্যের লেখক সালমান রুশদির লেখা বিতর্কিত উপন্যাস 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ। সম্প্রতি ভারতে আদালতের নির্দেশে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

ইরানের প্রথম সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ইসলাম ধর্মের অবমাননার দায়ে বইটির লেখক সালমান রুশদিকে হত্যার নির্দেশ দেন। এরপর বেশ কয়েকবছর লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন রুশদি (৭৭)।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব পাওয়া রুশদির জন্ম ভারতে হলেও দেশটিতে ১৯৮৮ সালে তার এই বইটি প্রকাশের অল্প সময় পরই নিষিদ্ধ করা হয়।

এ সপ্তাহে দিল্লির হাইকোর্টে এক মামলার রায়ে এই নিষেধাজ্ঞা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে।

২০১৯ সন্দীপন খান নামের এক পাঠক এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেন।

আদালত জানিয়েছে, বিবাদী পক্ষের কোনো প্রতিনিধি এই বইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মূল প্রজ্ঞাপন বা এ সংক্রান্ত কোন আদেশের প্রতিলিপি উপস্থাপন করতে সক্ষম হননি। যার ফলে, সন্দীপন এখন চাইলে বইটি দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে পারবেন বা কিনে নিয়ে আসতে পারবেন।

১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরে ভাইকিং পেঙ্গুইন নামের প্রকাশনী 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' প্রকাশ করেছিল। বইটি সমালোচকদের কাছ থেকে বিপুল প্রশংসা পায়।

তবে অনেক মুসলিম এই বইটিকে ইসলাম ধর্মের প্রতি অবমাননাকর হিসেবে বিবেচনা করেন।

স্যাটানিক ভার্সেস হাতে সালমান রুশদি। ছবি: রয়টার্স
স্যাটানিক ভার্সেস হাতে সালমান রুশদি। ছবি: রয়টার্স

ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজিব গান্ধী মুসলিম ভোটারদের সহানুভূতি আদায়ের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বইটি প্রকাশের এক মাসের মাথায় এর আমদানি নিষিদ্ধ করেন।

পরবর্তীতে ২০টি দেশে এই বই নিষিদ্ধ করা হয়।

১৯৮৯ সালে মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ইরানের খোমেনি এক ফতোয়ার মাধ্যমে রুশদিকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং সারা বিশ্বের মুসলিমদের তাকে হত্যা করার আহ্বান জানান।

'রুশদির মাথার' জন্য ২৮ লাখ মার্কিন ডলারের পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার পর যুক্তরাজ্য তাকে সার্বক্ষণিক পুলিশি প্রহরায় রাখে। ১৩ বছর তিনি নাম ভাঁড়িয়ে নিরাপদ অবস্থানে বসবাস করেন।

১৯৯১ সালে আবারও পাদপ্রদীপের আলোয় ফেরেন রুশদি।

২০২২ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় হামলার শিকার হন রুশদি। এই হামলায় তিনি একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি হারান।

চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় একজন দৌড়ে এসে সালমান রুশদিকে ঘুষি ও ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রুশদি মেঝেতে পড়ে গেলে লোকটি ক্ষান্ত হন।

পরবর্তীতে এই হামলার সঙ্গে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও ইরানের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

6h ago