ওয়াশিংটনে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠক, আলোচনায় যা থাকছে

নেতানিয়াহ-ট্রাম্প। কোলাজ ছবি: এএফপি
নেতানিয়াহ-ট্রাম্প। কোলাজ ছবি: এএফপি

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে ওয়াশিংটনে এসেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।

গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ব্লেয়ার হাউসে নেতানিয়াহুকে স্বাগত জানানো হয়।

দেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের জানান, 'এটা খুবই জরুরি বৈঠক।'

'শপথ নেওয়ার পর এটাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম কোনো বিদেশি নেতার সঙ্গে বৈঠক। এতেই বোঝা যাচ্ছে ইসরায়েল-আমেরিকার সংহতি কতটা শক্তিশালী। একইসঙ্গে, এটা আমাদের দুইজনের ব্যক্তিগত বন্ধুত্বেরও বড় প্রমাণ।'

যা নিয়ে আলোচনা

নেতানিয়াহু জানান, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, বাকি জিম্মিদের মুক্তি এবং ইরান ও তার জঙ্গি সহযোগীদের নিয়ে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ করবেন।

অপর আলোচ্য বিষয়টি হবে সৌদি আরবের সংগে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা।

'আমি আরও বেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে শান্তির বলয়কে বিস্তৃত করব এবং আমাদের শক্তিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে একটি অসামান্য, শান্তিপূর্ণ যুগের সূচনা করব', যোগ করেন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওমর দোস্ত্রি জেরুজালেম পোস্টকে বলেন, 'আমরা শান্তি অর্জন করতে চাই এবং ওই পক্ষও (সৌদি আরব) সেটাই চায়।'

১৯ শতকে নির্মিত অতিথি ভবন ব্লেয়ার হাউসে এটা নেতানিয়াহুর ১৪তম সফর। আর কোনো বিদেশি নেতা এতবার সেখানে থাকার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারেনি।

সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা

দোস্ত্রি স্বীকার করেন, ৭ অক্টোবরের আগে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা বা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি আরও সহজ ছিল।

সৌদি আরব এখন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর দাবি জানাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে এই দাবি জানিয়েছে রিয়াদ।

দোস্ত্রি বলেন, 'গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হলে এই প্রক্রিয়া নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে। এমনটাই ভাবছেন সৌদিরা।'

'কিন্তু আমরা এখনো গাজার লক্ষ্য পূরণ করিনি', যোগ করেন তিনি।

সৌদি আরবের অপর দাবি হলো, ইসরায়েলকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের রোডম্যাপ দিতে হবে।

দোস্ত্রি জানান, তারা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে 'বন্ধুভাবাপন্ন' মনে করেন না।

'হামাস চায় ইসরায়েলকে সামরিক প্রক্রিয়ায় ধ্বংস করতে। অপর দিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আইন-আদালতের শক্তিতে আমাদের নির্মূল করতে চায়, যেমন  আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে কাজে লাগিয়ে। কিন্তু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ যদি নিজেদের "বৈধ শাসক" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তাহলে তাদেরকে আরও অনেক কিছুর উন্নয়ন ঘটাতে হবে', যোগ করেন তিনি।

গাজার যুদ্ধবিরতি

হামাসের যোদ্ধা। ফাইল ছবি: এএফপি
হামাসের যোদ্ধা। ফাইল ছবি: এএফপি

গাজার ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করবেন দুই নেতা। যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

তাদের কয়েকজন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েল।

ইসরায়েল চাচ্ছে যতদিন পর্যন্ত সব জিম্মি মুক্তি না পাচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চলতে থাকুক।

অপরদিকে, হামাস চায় প্রথম পর্যায় শেষে স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা ও ঐক্যমত্য। এ বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের ঘোর আপত্তি রয়েছে।

কোনো পরিস্থিতিতেই তারা গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করতে রাজি না। অন্তত যতদিন পর্যন্ত হামাসের একজন যোদ্ধাও গাজায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। প্রকারান্তরে, ইসরায়েলের এই যুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য (যা এখনো পূরণ হয়নি) হচ্ছে গাজার শাসকের অবস্থান থেকে হামাসকে সরানো এবং তাদের সব সদস্য নির্মূল করা—যে অঙ্গীকার তারা হাতে নিয়েছিল ৭ অক্টোবরের পর।

বৈঠকের বিস্তারিত

ট্রাম্পের সঙ্গে উইটকফ। ছবি: এএফপি
ট্রাম্পের সঙ্গে উইটকফ। ছবি: এএফপি

সোমবার ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে গাজার যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে আলোচনা হবে।

এরপর মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে বসবেন নেতানিয়াহু; যার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।

এক কূটনীতিক সূত্র জানান, পরবর্তী আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন উইটকফ।

সূত্র জানান, গাজা প্রসঙ্গে সব আলোচনা ও দরকষাকষিতে বাইডেন প্রশাসনের মতো পরোক্ষ ভূমিকা রাখবে না বর্তমান প্রশাসন। আগের প্রশাসন সবকিছুর ওপর নজর রাখতো, আলোচনায় পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকা রাখত, কিন্তু কোনো কিছু বাস্তবায়ন করতে পারত না।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে এই দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসছে বলে জানান ওই সূত্র। তিনি গাজা প্রসঙ্গে আমেরিকাকে আরও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চান।

Comments

The Daily Star  | English

How Chattogram built its economic legacy

Picture a crowded harbour where the salty seabreeze carries whispers of far-off lands, where merchants of all creed and caste haggle over silks and spices, and where towering ships of all varieties – Chinese junks, Arab dhows, and Portuguese carracks – sway gently in the waters of the Bay of Bengal.

14h ago