যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেন ট্রাম্পের ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ নাকচ করায় মস্কো যাচ্ছেন রুবিও  

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আজ বুধবার লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের শীর্ষ কূটনীতিকদের মধ্যে বৈঠকের কথা ছিল, যা শেষ মুহূর্তে স্থগিত করা হয়েছে। 

বৈঠকটি এখন মন্ত্রী পর্যায়ের পরিবর্তে পাঁচ দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ।

জানা যায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শেষ মুহূর্তে সফর বাতিল করায় এই শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। লন্ডন বাদ দিয়ে এখন মস্কো সফরে যাচ্ছেন রুবিও। 

ইউক্রেনীয় শীর্ষ কর্মকর্তারা লন্ডনে উপস্থিত হলেও, রুবিওর পর অন্যান্য দেশের মন্ত্রীরাও এই বৈঠকে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্ব হারিয়েছে লন্ডনের বৈঠকটি। 

এর আগে, গত সপ্তাহে রুবিও ও তার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইউক্রেনে শান্তি আলোচনায় শিগগির অগ্রগতি না দেখলে আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাবে ওয়াশিংটন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার ইউক্রেন-রাশিয়ার শান্তি প্রক্রিয়ার একটি 'চূড়ান্ত প্রস্তাব' রাখে ট্রাম্প প্রশাসন। 

এই প্রস্তাবে কিয়েভ সম্মতি না দেওয়াতেও রুবিও এবং ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত প্রস্তাবে ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চল ক্রিমিয়া ও ২০২২ থেকে চলমান যুদ্ধে দখলকৃত প্রায় সব অঞ্চলই রাশিয়াকে দিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। 

মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'এ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। এটি আমাদের সংবিধানের লঙ্ঘন। এগুলো আমাদের ভূখণ্ড—ইউক্রেনীয় জনতার ভূখণ্ড।'

জেলেনস্কি সরকারের একটি সূত্র এই প্রস্তাবকে 'প্রবলভাবে রাশিয়াপন্থী' বলে আখ্যা দিয়েছে। 

এই কর্মকর্তার মতে, 'রাশিয়া কী পাচ্ছে, তা বেশ স্পষ্ট করে বলা আছে এই প্রস্তাবে। কিন্তু ইউক্রেন কী পাবে, তা বেশ অস্পষ্ট।' 

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী রাশিয়া যা যা পাচ্ছে

  • ক্রিমিয়াকে রুশ অঞ্চল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের 'আইনগত স্বীকৃতি' দেবে । 
  • ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চল পুরোপুরি এবং দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার দখলকৃত অংশে রাশিয়ার 'প্রকৃত নিয়ন্ত্রণের স্বীকৃতি' 
  • ইউক্রেন কখনোই ন্যাটোর সদস্য হবে না—এই প্রতিশ্রুতি। (তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে পারবে ইউক্রেন)
  • ২০১৪ সালের পর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার।
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে জ্বালানি ও শিল্প খাতে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেন যা যা পাচ্ছে

  • 'শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা'। এটি ইউরোপের কয়েকটি দেশ ও কিছু অইউরোপীয় দেশ নিয়ে গঠিত এক অস্থায়ী জোটের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। তবে এই শান্তিরক্ষী উদ্যোগ কীভাবে কাজ করবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। এতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণের কোনো উল্লেখ নেই।
  • খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার দখলে থাকা একটি ছোট অংশ ফেরত দেওয়া হবে।
  • দক্ষিণ ইউক্রেনে যুদ্ধরেখার পাশ দিয়ে যাওয়া দনিপ্রো নদীতে চলাচলের অধিকার 
  • পুনর্গঠনের জন্য ক্ষতিপূরণ ও সহায়তার আশ্বাস, তবে অর্থ কোথা থেকে আসবে তা উল্লেখ করা হয়নি।

 

Comments

The Daily Star  | English

India curbs import of Bangladeshi jute, woven fabrics, yarn

However, the products will be allowed to be imported only through Nhava Sheva seaport in Maharashtra

2h ago