অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনেও ‘ট্রাম্প-কার্ড’?

ট্রাম্প-কার্ড
অলঙ্করণ: আনোয়ার সোহেল/স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

ভোটবাক্সে আবারও আলোচনায় 'ট্রাম্প-কার্ড'। ঘটনাটি প্রথমে ঘটেছিল পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে—তথা কানাডায়। এবার ঘটতে যাচ্ছে ঠিক উল্টো দিকে। অর্থাৎ, দক্ষিণ গোলার্ধে—তথা অস্ট্রেলিয়ায়।

আজ শনিবার নিজেদের নেতা নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়াবাসী। কানাডার জাতীয় নির্বাচনের মতো অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনেও দেখা যাচ্ছে 'ট্রাম্প-কার্ডের' ব্যবহার।

বিবিসি'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের বাণিজ্যনীতির প্রভাব অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোকেও প্রভাবিত করেছে।

চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের পাশাপাশি ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী যে শুল্কযুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তা পুরো পৃথিবীর রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করে চলেছে।

গত সপ্তাহে এই 'ট্রাম্প-কার্ড'র জোরেই কানাডাবাসী তাদের নেতা হিসেবে 'গভর্নর' জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টিতেই ভরসা রাখেন। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে সেই 'কার্ড'ই যেন হাতে তুলে নিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়াবাসী।

অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ লেবার পার্টির নেতা। তার প্রধান বিরোধী পিটার ডাটন লিবারেল পার্টির নেতা। আলবানিজ নিজেকে অনেকটা ট্রাম্পবিরোধী রাখার চেষ্টা করছেন। কেননা, ট্রাম্পের নীতি অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি করছে। পাশাপাশি, তিনি যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া জোট টিকিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন।

অন্যদিকে, পিটার ডাটন নিজেকে প্রায়ই মার্কিনপন্থি হিসেবে তুলে ধরছেন। তিনি জনগণকে এটাই বোঝাতে চান যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে নেতা হিসেবে তার বিকল্প নেই।

এখন প্রশ্ন—নির্বাচনে যিনিই জিতুন না কেন তিনি কি 'আনপ্রেডিকটেবল' ট্রাম্পকে মোকাবিলা করতে পারবেন?

ট্রাম্পবিরোধী হাওয়া?

সিএনএন'র ভাষ্য—নির্বাচনের আগে জনমত জরিপে দেখা গেছে, ভোটের ফলাফলে লেবার পার্টি ভালো করবে। তবে সেই দেশে প্রধান দুই দলের আধিপত্য কমতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে ১৫০ আসনের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে প্রধান দুই দলের কোনো একটির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া মুশকিল হতে পারে।

অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার ব্রিটিশ কমনওয়েলথে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র কানাডায় ট্রাম্পবিরোধী জনমতকে কাজে লাগিয়ে লিবারেল পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি মার্ক কার্নি ক্ষমতায় এসেছেন।

গত কয়েক সপ্তাহ অস্ট্রেলিয়ার প্রধান দুই দলের নেতারা ভোটারদের আকৃষ্ট করতে কর কমানোসহ জনগণের মঙ্গল কামনায় বাগযুদ্ধে মেতে ছিলেন। তারা আবাসন, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু, সবকিছুর সঙ্গে উঠে এসেছিল আন্তর্জাতিক পটপরিবর্তনের কথাও।

আর সব মিত্রের মতো অস্ট্রেলিয়ার ঘাড়েও চেপেছে ট্রাম্প-শুল্ক। বিষয়টির সমালোচনা করে আলবানিজ বলেছিলেন, এটি 'দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের চেতনাবিরোধী'।

বিরোধীদলের নেতা ডাটন এই সমস্যার জন্য ক্ষমতাসীন লেবার পার্টিকে দায়ী করেছেন। তিনি ভোটারদের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, 'তিন বছর আগের তুলনায় এখন কি ভালো আছেন?' মনে রাখা দরকার, ২০২২ সালে আলবানিজ তৎকালীন লিবারেল-ন্যাশনাল জোট সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা নিয়েছিলেন।

আজ রয়টার্স'র শিরোনামে বলা হয়েছে—অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের চোখ ট্রাম্প ও জীবনযাত্রার খরচের ওপর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন—অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে ট্রাম্প হয়ত খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হবেন না। তবে ট্রাম্পের প্রভাব অনেক ভোটারের মনে বাড়তি 'হাওয়া' দেবে।

গত শুক্রবার গণমাধ্যম দ্য অস্ট্রেলিয়ান'র জরিপে বলা হয়, ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি ৫২ দশমিক পাঁচ শতাংশ ও বিরোধী লিবারেল-ন্যাশনাল জোট ৪৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পেতে পারে।

তবে আজ দিন শেষে দেখা যাবে কে হাসছেন বিজয়ের হাসি।

Comments

The Daily Star  | English

G7 expresses support for Israel, calls Iran source of instability

Israel and Iran attacked each other for a fifth straight day on Tuesday

1h ago