পাকিস্তানের প্রতি ‘সহমর্মিতা’ দেখানোয় ভারতে গ্রেপ্তার ৮১

পাকিস্তানের প্রতি 'সহমর্মিতা' দেখানোর দায়ে ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পুলিশ। গত কয়েক দশকের মধ্যে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের সবচেয়ে বড় মাত্রার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের প্রায় এক মাস পর এই পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি।
আজ রোববার ভারতের এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
গ্রেপ্তারের ঘটনাগুলো ঘটেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, 'পাকিস্তানের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোর দায়ে রাষ্ট্রবিরোধী ৮১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।'
বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক বিবৃতিতে জানান, 'আমরা সার্বক্ষণিকভাবে সামাজিক মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্টের ওপর নজর রাখছি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছি।'
আসাম পুলিশ এএফপিকে জানিয়েছে, গ্রেপ্তার একজন ইনস্টাগ্রামে পাকিস্তানের পতাকার ছবি পোস্ট করেছিলেন।
তবে বাকি ৮০ জনের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। এই ঘটনার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমের ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে নয়াদিল্লি।
গত কয়েক দশকের মধ্যে মুসলিম অধ্যুষিত ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় মাত্রার সহিংসতার ঘটনার পর ইসলামাবাদকে ওই হামলায় ইন্ধন জোগানোর দায় দেয় নয়াদিল্লি।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চার দিনের সংঘর্ষে জড়ায় দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরাশক্তি।
১৯৯৯ সালের পর এটাই ছিল ভারত-পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সংঘাত।
পরবর্তীতে মার্কিন মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দেয় দুই দেশ। তবে ভারত এখনো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।
গত মাসে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা আধা-সামরিক পুলিশ বাহিনীর এক কর্মকর্তাকে পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে নাশকতার অভিযোগে আরও অন্তত ১০ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে, পাকিস্তানের হামলা চালাতে গিয়ে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে ভারত।
দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান (চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ) অনিল চৌহান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেন।
তবে 'অপারেশন সিঁদুরে' ভারত ঠিক কতগুলো যুদ্ধবিমান হারিয়েছে তা তিনি বিস্তারিত জানাননি।
সিঙ্গাপুরের সাংগ্রি-লা ডায়ালগ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনিল চৌহান বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—এই ক্ষয়ক্ষতি কেন হলো তা নির্ধারণ করা এবং এরপর আমরা কী করব।'
এর আগে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর তাৎক্ষণিক প্রতিরক্ষায় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ গণমাধ্যমটিকে বলেন, ভারত সব বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে, সেখানে কোনো জঙ্গি শিবির ছিল না।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পরে বলা হয়, তারা তিনটি রাফাল, একটি এসইউ-৩০ এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
তবে ভারতের কোন কোন বিমান ভূপাতিত হয়েছিল, সে বিষয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
Comments