ইসরায়েলি নেতাদের কোনো ‘ছাড়’ নেই: খামেনি

তেহরানে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ফাইল ছবি: এএফপি
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এএফপি ফাইল ফটো

টানা ছয় দিন ধরে চলছে ইসরায়েল-ইরানের যুদ্ধ। চলমান পরিস্থিতিতে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি অঙ্গীকার করেছেন, তিনি ইসরায়েলি শাসকদের কোনো ছাড় দেবেন না। 

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

সামাজিক মাধ্যম এক্সে পোস্ট করে খামেনি বলেন, 'আমাদেরকে অবশ্যই (ইসরায়েলের) সন্ত্রাসী ও জায়নবাদি শাসকদের কড়া জবাব দিতে হবে। আমরা জায়নবাদিদের কোনো ছাড় দেব না।'

গত সপ্তাহে ইরানের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু অ সামরিক স্থাপনা। রাজধানী তেহরানসহ একাধিক আবাসিক এলাকাও আক্রান্ত হয়।

ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে পাল্টা হামলা চালায় ইরান।

আজ বুধবার দেশটি ইসরায়েল অভিমুখে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথাও জানিয়েছে।

খামেনি দাবি করেন, আজকে থেকেই প্রকৃত অর্থে যুদ্ধ শুরু করেছে তার দেশ।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্য কমে আসছে, তবে 'আপাতত' ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার কোনো উদ্দেশ্য তাদের নেই। তিনি ইরানের প্রতি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। খামেনি ইরানের কোথায় আছেন সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য আছে বলেও জানান ট্রাম্প। প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, খামেনি 'আপাতত' নিরাপদ আছেন।

'তিনি (খামেনি) সহজ লক্ষ্যবস্তু, তবে সেখানে নিরাপদ আছেন। আমরা তাকে অপসারণ (হত্যা!) করব না। অন্তত এখনই না', যোগ করেন ট্রাম্প।

তবে মুখে এ কথা বললেও থেমে নেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতা

গত তিন দিনে ৩০টির বেশি মার্কিন সামরিক বিমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপের বিভিন্ন ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে পাঠানো হয়েছে একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী।

তেল আবিবে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে ব্যতিব্যস্ত ইসরায়েলি আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: এএফপি
তেল আবিবে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে ব্যতিব্যস্ত ইসরায়েলি আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: এএফপি

ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা এবং বিশেষজ্ঞদের বরাতে বিবিসি ও রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা একে আসন্ন কোনো বড় সংঘাতের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন।

এদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহতের কাজে ব্যবহৃত অ্যারো মিসাইলের মজুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে, ইরান থেকে ধেয়ে আসা দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানোর সক্ষমতাও কমে আসতে পারে ইসরায়েলের।

জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি বাহরেইনি বলেছেন, ইসরায়েলি হামলার 'কড়া' জবাব দেবে ইরান এবং এ ক্ষেত্রে কোনো 'বাছবিচার' করা হবে না।

জেনেভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'দেশের জনগণ, নিরাপত্তা ও অখণ্ডতা রক্ষায় আমরা কোনো ধরনের অনীহা প্রকাশ করব না। আমরা গুরুতর আকারে ও কোনো বাছবিচার ছাড়াই কড়া জবাব দেব।'

সব কিছু ছাপিয়ে, সবার মনে সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটি আসছে, তা হলো, খামেনি এখন কি করবেন?

 

Comments