ইসরায়েলি হামলায় কারাগারে নিহত ৭১ জনের তথ্য প্রকাশ ইরানের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধের আপাত: অবসান ঘটেছে। ভঙ্গুর বলে বিবেচিত হলেও দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আজ ষষ্ঠ দিনে পা রেখেছে। আজ জানা গেছে, ওই যুদ্ধের এক পর্যায়ে তেহরানের এভিন কারাগারে হামলা চালিয়ে ৭১ জনকে হত্যা করে ইসরায়েল।
আজ রোববার ইরানের বিচার বিভাগের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি ও রয়টার্স।
শুরুতে শুধু সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় হামলার কথা বললেও ১২ দিনের শেষদিকে ইরানের রাজনৈতিক বন্দিদের আটকে রাখার জন্য কুখ্যাত ওই কারাগারে হামলা চালায় ইসরায়েল।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, এই ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে যে সামরিক ও পরমাণু স্থাপনার মাত্রা ছাড়িয়ে ইরানের শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার অন্যান্য 'প্রতীকেও' হামলা শুরু করেছিল ইসরায়েল।
সোমবারের ওই হামলায় তেহরানের উত্তরাঞ্চলের বড় ও অত্যন্ত সুরক্ষিত কারাগারটির প্রশাসনিক ভবনের অংশবিশেষ ধ্বংস হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ওই কারাগারে অনেক রাজনৈতিক বন্দি ও বিদেশি নাগরিক আটক ছিলেন।
বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর বলেন, 'আনুষ্ঠানিক তথ্য অনুযায়ী, এভিন কারাগারের হামলায় ৭১ জন নিহত হয়েছেন।'
১৩ জুন থেকে ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
জাহাঙ্গীর বলেন, নিহতদের মধ্যে এভিন কারাগারের প্রশাসনিক কর্মী, নিরাপত্তাকর্মী, কয়েদি ও কয়েদির দেখতে আসা আত্মীয়স্বজন এবং আশেপাশের এলাকায় যারা বসবাস করেন, তারাও আছেন।

বিচার বিভাগ কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। সেখানে কারাগারের অভ্যর্থনা অংশে ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেওয়াল, ধসে পড়া ছাদ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভাঙা পাথরের স্তূপ ও অন্যান্য ভেঙে পড়া নির্মাণ সামগ্রী দেখা গেছে।
বিচার বিভাগ বলছে, এভিনের চিকিৎসা কেন্দ্র ও কয়েদিদের দেখতে আসা আত্মীয় পরিজনদের অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে।
হামলার পরের দিন মঙ্গলবার এভিন কারাগার থেকে ইরানের কারাগার কর্তৃপক্ষ বেঁচে থাকা বাকি কয়েদিদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায়। তবে কতজন কয়েদিকে কোথায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা জানানো হয়নি।
এভিনের কয়েদিদের মধ্যে শান্তিতে নোবেলজয়ী নার্গেস মোহাম্মদি ও ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশের বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক আটক ছিলেন।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বাখো সোমবার বলেন, ইসরায়েলি হামলায় এভিন কারাগারে তিন বছর ধরে আটক থাকা ফরাসি নাগরিক সেসিল কোহলার ও জাঁক প্যারিসের কোনো ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। তিনি এ ধরণের কোনো ঘটনাকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে আখ্যা দেন।
Comments