‘বিবি’র বিচার সহ্য করবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প, নেতানিয়াহুকে চলে যেতে হবে: বেনেট

ডোনাল্ড ট্রাম্প, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও নাফতালি বেনেট। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বাঁচাতে আবারও ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গতকাল শনিবার তিনি বলেছেন, 'বিবি'র (নেতানিয়াহুর ডাক নাম) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে চলমান বিচারিক কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্র 'সহ্য করবে না'।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে লিখেন, 'ইসরায়েলকে রক্ষা ও সহায়তায় প্রতি বছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্র, যা অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। আমরা এটা সহ্য করব না।'

এতে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেননি নেতানিয়াহু। এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছেন, 'আবারও ধন্যবাদ, একসঙ্গে আমরা...মধ্যপ্রাচ্যকে আবার মহান করব!'

এএফপি বলছে, গত শুক্রবার ইসরায়েলের এক আদালত দুর্নীতির মামলায় নেতানিয়াহুর সাক্ষ্য গ্রহণের সময় পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। রায়ে বলা হয়েছে, এই অনুরোধের জন্য যথেষ্ট কারণ দেখাতে পারেননি তিনি।

একটি মামলায় নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারা রাজনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে বিলিয়নিয়ারদের কাছ থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার ডলারেরও বেশি মূল্যমানের বিলাসবহুল উপহার, যেমন: সিগার, গয়না ও শ্যাম্পেন গ্রহণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন।

অন্য দুই মামলায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম থেকে আরও অনুকূল কভারেজ পাওয়ার জন্য আলোচনা চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।

নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের সময় ট্রাম্পের সমর্থনের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

নেতানিয়াহু 'নিরাপত্তাজনিত বিষয়গুলোতে' মনোনিবেশ করতে চান, এই কারণ দেখিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের শুনানি থেকে নেতানিয়াহুকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন তার আইনজীবী। 

গত বুধবার নেতানিয়াহুর পক্ষ নিয়ে ট্রাম্প এই বিচারিক কার্যক্রমকে 'উইচ হান্ট' বলেও উল্লেখ করেছিলেন।

এর আগে, গত শনিবার নেতানিয়াহুকে 'যুদ্ধের নায়ক' হিসেবে অভিহিত করে ট্রাম্প বলেছিলেন, 'বিচারের এই প্রহসন' নেতানিয়াহুকে ইরান ও হামাসের সঙ্গে আলোচনার পথ থেকে বিভ্রান্ত করবে, যদিও ইরানের সঙ্গে কী ধরনের আলোচনা হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল হামাস। যাদের মধ্যে ৪৯ জন এখনো গাজায় আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে এবং এর মধ্যে ২৭ জন মৃত বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি ও নিহতদের মরদেহ ফিরিয়ে আনার আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প আরও বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যেমন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হয়েছিল, একই ঘটনা ঘটছে নেতানিয়াহুর ক্ষেত্রেও।

'এটি একটি রাজনৈতিক উইচ হান্ট, যা আমার নিজের ভোগান্তির মতোই', বলেন ট্রাম্প।

নেতানিয়াহুকে চলে যেতে হবে: নাফতালি বেনেট

মিত্র দেশের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছ থেকে সব বিষয়ে নিরঙ্কুশ সমর্থন পেলেও নিজ দেশে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, নেতানিয়াহুকে অবশ্যই ক্ষমতা ছাড়তে হবে।

যদিও ডানপন্থি এই নেতা আবার নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না তা নিশ্চিত করেননি।

গত শনিবার ইসরায়েলি চ্যানেল ১২-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনা করে বেনেট বলেন, 'নেতানিয়াহু ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন...এটা অনেক বেশি বেশি, এটা ঠিক নয়।'

'তিনি (নেতানিয়াহু) ইসরায়েলি সমাজকে বিভাজনের জন্য গুরুতরভাবে দায়ী' বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এএফপি বলছে, রাজনীতি থেকে সাময়িক বিরতি নেওয়া বেনেটের ফেরার গুঞ্জন উঠেছে এবং জনমত জরিপে দেখা গেছে, তিনি আবারও নেতানিয়াহুকে পরাজিত করার মতো সমর্থন পেতে পারেন।

তবে ২০২৬ সালের শেষ ভাগের আগে কোনো নির্বাচন হবে কি না, তা নির্ধারিত নয়, যদিও ইসরায়েলে আগাম নির্বাচন একটি সাধারণ ঘটনা।

গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলাকে 'ব্যতিক্রমী প্রদর্শন' উল্লেখ করলেও দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে 'একটি বিপর্যয়' বলে অভিহিত করেছেন বেনেট।

নেতানিয়াহু সরকারের 'সিদ্ধান্তহীনতার' কঠোর সমালোচনা করে গাজায় অবশিষ্ট সব জিম্মির মুক্তির জন্য অবিলম্বে একটি 'সামগ্রিক' চুক্তিরও আহ্বান জানান তিনি।

নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্যে বেনেট বলেন, 'হামাস নির্মূলের কাজটি ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য রেখে দিন।'

 

Comments

The Daily Star  | English
nahid-ctg

NCP attacked in Cox's Bazar for exposing the truth: Nahid

Hasnat says those who ruled Bangladesh in the past planned escape routes abroad

7m ago