নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে ‘আগুন জ্বালিয়ে’ বিক্ষোভ

পার্লামেন্টে অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে নেতানিয়াহু। ফাইল ছবি: রয়টার্স
পার্লামেন্টে অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে নেতানিয়াহু। ফাইল ছবি: রয়টার্স

জেরুসালেমের বিভিন্ন জায়গায় গাজার আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। আজ ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেট, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী রন ডারমারের বাড়ির সামনে 'আগুন জ্বালিয়ে' বিক্ষোভে অংশ নেন ইসরায়েলিরা।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট।

ইসরায়েলিদের ধারণা, গাজায় আটকে থাকা ৪৮ জিম্মিকে মুক্ত করার একমাত্র উপায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করে হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে আসা। 

এই ধারণাকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে তেল আবিব, জেরুসালেমসহ সমগ্র ইসরায়েলজুড়ে নিয়মিত বিক্ষোভ হচ্ছে।

নেসেট ও মন্ত্রীদের বাসভবনের পাশাপাশি জাতীয় পাঠাগারের সামনেও আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়।  

পুলিশ জানিয়েছে, জেরুসালেমে নেতানিয়াহুর বাড়ির কাছে রেহাভিয়া ও গিভাত রাম মহল্লায় ময়লার ভাগাড় ও গাড়ির চাকায় অগ্নিসংযোগের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। এতে পার্ক করে রাখা গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করে।

নেতানিয়াহুর বাড়ির কাছে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ছবি: সংগৃহীত
নেতানিয়াহুর বাড়ির কাছে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ছবি: সংগৃহীত

আগুন ছড়িয়ে পড়লে একাধিক ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

তবে এসব বিক্ষোভের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

ইসরায়েলি পুলিশ আবাসিক এলাকায় অগ্নিসংযোগের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, 'বিক্ষোভের অধিকার থাকা মানেই এই নয় যে অন্যের সম্পদে আগুন ধরিয়ে দেওয়া যাবে। এতে জনসাধারণ অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।'

তারা জানান, আগুনের কারণে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হয়েছে, যা 'সীমা ছাড়িয়েছে' এবং এর সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত বিক্ষোভের কোনো যোগসূত্র নেই।

কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ইসরায়েলের জাতীয় পাঠাগারের ছাদে উঠে বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যায়। 

কেন্দ্রীয় পাঠাগারের ছাদে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেন। ছবি: সংগৃহীত
কেন্দ্রীয় পাঠাগারের ছাদে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেন। ছবি: সংগৃহীত

নেসেটে বিরোধী দলীয় নেতা ও ইয়েশ আতিদ দলের চেয়ারম্যান এমকে ইয়ার লাপিদ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেন, তিনি 'জেরুসালেমে আগুনে গাড়ি পোড়ানোর' প্রতি নিন্দা জানালেও, যে 'সরকার গাজায় জিম্মি হয়ে থাকা নাগরিকদের পরিত্যাগ করেছে, তাদের প্রতি আরও বেশি নিন্দা জানাচ্ছেন।'

জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভি জানান, এগুলো 'জঙ্গি কর্মকাণ্ড'।

'এর মদদ দিচ্ছে একজন অপরাধী অ্যাটর্নি জেনারেল যিনি গোটা দেশকে পোড়াতে চান', যোগ করেন তিনি। 

মন্ত্রী ডারমারের বাড়ির সামনে 'ব্রাদার্স ইন আর্মস' নামের প্রতিবাদী সংগঠনের হাজারো কর্মী বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, ডারমার জিম্মি মুক্তির বিষয়টির দায়িত্ব নেওয়ার পর একজন জিম্মিও মুক্তি পাননি। এ কারণে তারা '৪৮ জিম্মি, ডারমার ০' লেখা ব্যানার উঁচিয়ে প্রতিবাদ জানান।

ইসরায়েলি মন্ত্রী রন ডারমার। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি মন্ত্রী রন ডারমার। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

সংগঠনটি জানায়, 'ডারমারকে অনেক বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার কাজ ছিল জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনা। ফলাফলই বলে দিচ্ছে ঘটনা কি ঘটেছে। ৪৮ জিম্মি এখনো সুড়ঙ্গে আর আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর একজনও মুক্তি পায়নি।'

'সরকার চরমপন্থি মন্ত্রীদের রাজনৈতিক স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে এবং আলোচনার টেবিলে থাকা চুক্তিটি মেনে না নিয়ে জিম্মিদের জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এখুনি এসব বন্ধ করার সময়। এখুনি সময় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ চুক্তিতে যাওয়ার, যার মাধ্যমে সবাইকে ফিরিয়ে আনা যাবে। প্রয়োজনে যুদ্ধ বন্ধ করে হলেও।'

Comments

The Daily Star  | English

Election 2026: Candidates can't govern educational institutions in their areas

New draft amendments to the RPO also mandate income tax returns, stricter affidavit rules

22m ago