শীতে চুলের যত্নে তেল

চুলের যত্নে তেল। ছবি: সংগৃহীত

শীত আসতে না আসতেই দেখা দিচ্ছে চুলের নানারকম সমস্যা। খুশকি, ড্রাই স্ক্যাল্পের সমস্যার সঙ্গে অনেকের চুলে দেখা দিয়েছে অতিরিক্ত রুক্ষতা। সবগুলো অবস্থাতেই তেল হতে পারে সহজ সমাধান। কেননা তেল যে শুধু চুলের নির্দিষ্ট অংশকে ফোকাস করবে তা নয়, তেলের সাহায্যে চুলের অন্যান্য অনেক সমস্যা থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে।

আমরা সবাই কমবেশি বেসিক তেলগুলো ব্যবহার করে থাকি। যেমন- নারকেল তেল কিংবা অলিভ ওয়েল। বেসিক তেল ব্যবহার করা খারাপ নয়, কিন্তু চুলের সমস্যা অনুযায়ী এই নির্দিষ্ট তেলগুলোকে আরও বেশি শক্তিশালী বানানো সম্ভব। তাই এই শীতে চুলের যত্নে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন কিছু তেল নিয়ে চলুন জেনে নিই। সেই সঙ্গে জেনে নিন কীভাবে সহজেই বানিয়ে নিতে পারবেন এই জাদুকরী মিশ্রণগুলো।

বাদাম তেল

শীতে বেশিরভাগ মানুষ চুলের রুক্ষতা অনুভব করেন। সেক্ষেত্রে বাদাম তেলের কোনো জুড়ি নেই। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ এই তেল যে কেবল চুলের জন্য উপকারী তা নয়, স্বাস্থ্যকর স্ক্যাল্পের জন্যও বিশেষভাবে কার্যকর। চুলের গোঁড়ায় এই তেল দিতে পারেন সপ্তাহে অন্তত একদিন। তাহলে এই শীতের রুক্ষ সময়েও আপনার চুল থাকবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।

টি ট্রি এর সঙ্গে নারকেল তেল

স্ক্যাল্পে অনেক সময়ই র‌্যাশ দেখা দেয় এবং অনেক সময় খুশকি ও অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। সেজন্য টি ট্রি তেলের ব্যবহারে স্ক্যাল্পের সব সমস্যা দূর হবে। তবে এসেনশিয়াল হওয়ার কারণে এই তেল সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করা যায় না। তাই এই টি ট্রি তেলের সঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে নারকেল তেল। ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেলের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন ৫-৬ ফোঁটা টি ট্রি এসেনশিয়াল ওয়েল। নারকেল তেলের মধ্যে থাকে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল অনেক উপাদান, আর টি ট্রির তো জুড়ি নেই। তাই এই ২ তেলের মিশ্রণ আপনার চুলের সুস্থ ত্বকের জন্য পর্যাপ্ত শক্তিশালী।

জবা ও তেলের মিশ্রণ

খুশকি দূর করে চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে জবা ফুলের জুড়ি নেই। একটি ছোট পাত্রে কিছুটা নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েকটি পাতাসহ জবা ফুল দিয়ে দিন। অল্প আঁচে তেল গরম করুন যেন ফুলের নির্জাস ভালোভাবে মিশে যেতে পারে। এবার ঠাণ্ডা করে কোনো কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করুন। গোসল করার প্রায় এক ঘণ্টা আগে এই তেল দিয়ে রাখুন স্ক্যাল্পে। কয়েক মাসেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

মেথি ও তেলের মিশ্রণ

চুলের উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে এই তেল বেশ কার্যকরী। ২ ভাবে মেথি তেল বানাতে পারবেন। প্রথমত- তেলের সঙ্গে মেথি গুড়া মিশিয়ে নিতে হবে।  অপর পদ্ধতি হলো- আস্ত মেথি দানা নারকেল তেলের সঙ্গে ভিজিয়ে রাখা। দুটির যেকোনো একটি ব্যবহার শুরু করতে পারেন। এই ছোট একটি চেষ্টা আপনার চুলকে অনেক বেশি সিল্কি আর স্মুথ হতে সহায়তা করবে।

লক্ষ্য রাখুন-

অনেক বেশি সময় তেল দিয়ে রাখলেই সেটা চুলের জন্য ভালো হবে এমন নয়। বরং এতে চুলে ধুলোবালি আরও বেশি করে আটকে থাকে এবং নানারকমের সমস্যা দেখা দেয়। তার চেয়ে এক থেকে ২ ঘণ্টা চুলে তেল রেখে ধুয়ে ফেলুন। আরও ভালো ফলাফল পেতে চাইলে তেল ব্যবহারের আগে হালকা গরম করে নিন।

কম পরিমাণে তেল ব্যবহার করলেই চুলে সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন। কেননা বেশি পরিমাণে তেল ব্যবহার করলে সেই তেল ধোয়ার সময় অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। এতে চুল হয়ে যাবে আরও বেশি রুক্ষ। তাই কেবল চুলের গোঁড়ায় তেল ব্যবহার করুন।

চুলে তেল প্রয়োগের সময় ম্যাসাজ খুব জরুরি। তবে সেটি করতে হবে খুব ধীরে ধীরে। নয়তো উপকারের চেয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

তেল দেওয়ার পর চুল অনেক নরম থাকে এবং সহজেই ভেঙে যায়। তাই টাইট করে চুল বেধে রাখা কিংবা ব্যান্ড আটকে রাখা উচিৎ নয়। চুল খোলা রাখলেই ভালো।

Comments

The Daily Star  | English
monetary policy

Can monetary policy rescue the economy?

The question remains whether this policy can rescue the economy from the doldrums and place it firmly on the path of vibrancy.

8h ago