মুক্তা ভুলে গয়নার বাক্সে তুলে নিন সি শেল

কড়ির গয়না
ছবি: আদনান রহমান

প্রকৃতিকে আমরা বলি মা। আমাদের এই প্রকৃতি মা সত্যিকার অর্থেই বিস্ময়কর। তিনি তার সন্তানদের জন্য খাবার আর উষ্ণতার ব্যবস্থাও করেন সুচারুভাবে। তার সৃষ্টিগুলো এতটাই নিখুঁত হয় যে, সেগুলোর অনন্য সৌন্দর্য দেখে আমরা মুগ্ধ না হয়ে পারি না।

উদাহরণ হিসেবে ঝিনুকের মতো সি শেলগুলোর কথা বলতে পারি। প্রথম দর্শনে হয়তো ঝিনুক-শামুক বা কড়ির মতো সামুদ্রিক প্রাণীর খোলসগুলোর নির্মাণশৈলির সূক্ষ বিষয়গুলো নজরে পড়বে না। কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারবেন যে প্রতিটি খোলস অনন্য এবং দারুণ নান্দনিক।

অনেকেই হয়তো জানেন না যে, সাম্রদ্রিক নরম প্রাণীগুলোকে ঢেকে রাখা এসব খোলস তৈরি হতে বেশ লম্বা সময় লাগে। আর এগুলো আমাদের বাস্তুতন্ত্রের অন্যতম অবিচ্ছেদ্য উপাদান, যা বাস্তুতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখে, সমৃদ্ধ করে। এসব খোলসের সৌন্দর্য এক কথায় অতুলনীয়।

ঐহিত্যবাহীভাবে নান্দনিক সাজসজ্জায় ঝিনুক-শামুক বা কড়ি ব্যবহার করা হয়। সাধারণত উপকূলীয় অঞ্চলের কারুশিল্পে এর ব্যবহার বেশি, কারণ সেখানে এগুলো সহজলভ্য।

ছবি: আদনান রহমান

আপনি যদি সমুদ্রপ্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে পড়ার টেবিলে ঝিনুকের খোলস দিয়ে তৈরি একটি টেবিল ল্যাম্প রাখতে পারেন, কিংবা দরজায় ঝুলিয়ে দিতে পারেন শামুক-ঝিনুক গেঁথে তৈরি পর্দার মতো ঝালর। আবার ঝিনুক জড়ানো ফটোফ্রেমেও ধরে রাখতে পারেন আপনার দারুণ সব মুহূর্তগুলো।

ঝিনুক দিয়ে তৈরি ঘর সাজানোর এমন আকর্ষণীয় সব জিনিস আপনি পেতে পারেন উপকূলীয় শহরের বিপণি বিতানগুলোয়। পাবেন ঢাকার চাঁদনি চক বা গাউসিয়া মার্কেটেও। এছাড়া আড়ং বা দেশি দশের মতো অভিজাত বিপনীবিতানেও পাওয়া যায় ঘর সাজানোর নানা উপকরণ, যা আপনার বাড়িতে নিয়ে আসতে পারে সমুদ্রের ছোঁয়া।

পাশাপাশি কড়ির মতো খোলসের ব্যবহার বাংলাদেশের পোশাকেও হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। দেশের ফ্যাশন ডিজাইনাররা এর থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন। যেমন একটি ঢিলেঢালা জ্যাকেটে যদি ঝিনুক বা কড়ি যুক্ত করা যায়, তাহলে খুব সহজেই আপনি একটি বোহো লুক পেতে পারেন।

শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে ব্লাউজে যদি কড়ি ব্যবহার করা যায়, তাহলে তা দারুণ দেখাতে পারে। অনেক স্থানীয় ডিজাইনারকেই আমরা সুই-সুতার কাজের সঙ্গে কড়ির মতো অনুষঙ্গ যুক্ত করে আকর্ষণীয় সব পোশাক তৈরি করতে দেখি।

কড়ির গয়না
ছবি: আদনান রহমান

আবার শাড়ির আঁচল থেকে যদি ট্যাসেলের সঙ্গে ঝুলতে থাকে কড়ি, তবে তা দারুণ দেখায়। কামিজ বা ফতুয়াতেও সামান্য কয়েকটি কড়ির ব্যবহার এই চেহারাই পাল্টে দিতে পারে। কড়ির আরেকটি চমৎকার ব্যবহার হতে পারে গয়না হিসেবে।

কড়ি দিয়ে কানের দুল, গলার মালা, চুড়ি, আংটি, ব্রেসলেট থেকে শুরু করে নানা ধরনের গয়না তৈরি করা হয়, যা যে কারো পছন্দ হবে।

সাধারণ কালো রঙের একটি পোশাকের সঙ্গে কড়ির চোকার কিংবা সাদা ম্যাক্রমের পোশাকের সঙ্গে কড়ি দিয়ে তৈরি হাতভর্তি বালা পরলে, পোশাকের চেহারাই বদলে যেতে পারে। সেই সঙ্গে চেহারায় একটু বাঙ্গালিয়ানা ফুটিয়ে তুলতে করে নিন চুঁড়া করে খোঁপা আর তাতে জড়িয়ে নিন কড়ি বা ঝিনুক বসানোর ক্লিপ।

আবার কড়ি বা ঝিনুক বসানো ব্রুচ গেঁথে নিন জ্যাকেটে, দেখুন সবাই ঘুরে ঘুরে কেবল আপনাকেই দেখবে!

ছবি: আদনান রহমান

কড়ি দিয়ে তৈরি কানের দুল সম্ভবত সব মেয়েরই পছন্দ। কানে কড়ি ঝুলিয়ে যেন তারা সমুদ্রকেই মনে করতে চায়, বছরভর শুনতে চায় ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার শব্দ।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কড়ি বা ঝিনুকের এসব সামগ্রী বাজারে খুব সুলভ মূল্যেই পাওয়া যায়। একজোড়া কানের দুল পেয়ে যাবেন ৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। পুরো সেট গয়না পাবেন এক হাজার থেকে সাত হাজার টাকার মধ্যে, একজোড়া চুড়ির দাম হতে পারে এক থেকে চার হাজার টাকা।

আবার হলুদ বা মেহেদিতে ফুলের গয়নার চমৎকার বিকল্পও হতে পারে কড়ির গয়না।

সামনেই আসছে বিয়ের মৌসুম, সেখানে কড়ির গয়নার ব্যবহার দারুণ ট্রেন্ড হতে পারে। আইডিয়া দিলাম, চাইলে কাজে লাগাতে পারেন।

মডেল: প্রমা

স্টাইলিং: সোনিয়া ইয়াসমিন ইশা

গয়না: রঙ্গবতী

মেকআপ: সুমন রাহাত

অনুবাদ করেছেন শেখ সিরাজুম রশীদ

Comments

The Daily Star  | English
NSC shop rent scam in Dhaka stadiums

Shop rent Tk 3 lakh, but govt gets just Tk 22,000

A probe has found massive irregularities in the rental of shops at nine markets of the National Sports Council (NSC), including a case where the government receives as little as Tk 22,000 in monthly rent while as much as Tk 3 lakh is being collected from the tenant. 

17h ago