দিনে কয়টি ডিম খাওয়া যায়, কুসুমসহ না ছাড়া, সেদ্ধ, পোচ নাকি ভাজা

ছবি: সংগৃহীত

ডিম প্রোটিনের অন্যতম উৎস, একটি আদর্শ খাদ্য। সহজলভ্য ও পুষ্টিকর হওয়ায় আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় এটি সাধারণত থাকে। ডিম একেকজন একেকভাবে খেয়ে থাকেন। কেউ হয়তো ভেজে খেতে পছন্দ করেন, কেউ পোচ করে, আবার কেউ পছন্দ করেন সেদ্ধ করে খেতে।

ল্যাবএইড আইকনিকের সিনিয়র পুষ্টিবিদ ফাহমিদা হাশেমের কাছ থেকে আজ আমরা জানব সেদ্ধ, পোচ বা ভাজার ক্ষেত্রে ডিমের পুষ্টিগুণের কেমন তারতম্য হয় এবং কোন পদ্ধতিতে ডিম খেলে ডিম থেকে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। একজন ব্যক্তি প্রতিদিন কয়টা ডিম খেতে পারবেন ও কুসুমসহ নাকি ছাড়া ডিম খেতে হবে সেটিও জানব তার কাছ থেকে। 

ফাহমিদা হাশেম জানান, একটি ডিমের জৈব্যমূল্য অনেক। এতে ক্যালরি থাকে ৭৪-৭৭ কিলোক্যালরি, ফ্যাট থাকে ৫.২ গ্রাম ও প্রোটিন থাকে ৮ গ্রাম। কীভাবে ডিম খেলে কেমন পুষ্টি পাওয়া যাবে হবে সেটা নির্ভর করে রান্নার পদ্ধতির ওপর।

ডিম ভাজা

ডিম ভাজার ক্ষেত্রে যদি অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করা হয় তখন সেটি স্বাস্থ্যসম্মত হবে না। তেল দিয়ে ভাজা হলে ডিমের পুষ্টি উপাদান কমবে না, কিন্তু অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেড়ে যাবে। যেটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে একটু বাটার ব্রাশ করে বা তেল স্প্রে করে ডিম ভাজলে স্বাস্থ্যসম্মত হবে।

ডিম পোচ

ডিম পোচের ক্ষেত্রেও যদি অতিরিক্ত তেল দিয়ে করা হয় তবে সেটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণ হতে পারে। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তাদের প্রদাহ শুরু হতে পারে। তবে পোচ যদি অল্প তেল ব্রাশ করে বা ওয়াটার পোচ বা চামচে স্টিমের মাধ্যমে পোচ করা হয় সেটি বেশি স্বাস্থ্যসম্মত হবে।

সেদ্ধ ডিম

সেদ্ধ ডিম খাওয়া সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যসম্মত মনে করা হয়। কারণ এটিতে তেল ব্যবহার করা হয় না। ডিম অল্প সেদ্ধ বা বেশি সিদ্ধ যেভাবেই খাওয়া হোক পুষ্টিমান একই থাকে, পরিবর্তন হয় না। তবে কাঁচা ডিমে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে। অল্প সেদ্ধ অর্থাৎ ৩-৪ মিনিট সেদ্ধ করলে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া থেকে যেতে পারে। তাই ৭-৮ মিনিট সেদ্ধ করে খাওয়া হলে সেটা সবচেয়ে ভালো। আবার কেউ ১০-১২ মিনিট সেদ্ধ করে শক্ত কুসুম খেতে চাইলে খেতে পারবেন।

অর্থাৎ ডিম পোচ, ভাজা, সেদ্ধ যেভাবে খাওয়া হোক সেটা পুষ্টিসমৃদ্ধ হবে যদি রান্নার পদ্ধতি স্বাস্থ্যসম্মত হয়।

এগুলো ছাড়া আরও কিছু উপায়ে ডিম খেলে ডিমের পুষ্টিমূল্য বৃদ্ধি পায়। যেমন- অনেক সময় বাচ্চারা ডিম খেতে চায় না। এক রকম সেদ্ধ বা পোচ খেতে ভালো লাগে না। সেক্ষেত্রে ডিমের সঙ্গে যদি বিভিন্ন সবজি যোগ করে ভাজা হয় বা পনির, চিজ, এক কাপ দুধ যোগ করে বেক করা হয় তখন সেটি খেতেও সুস্বাদু হবে, পাশাপাশি এটি হবে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।

একজন প্রতিদিন কয়টা ডিম খেতে পারবেন ও কুসুম প্রসঙ্গ 

একজন মানুষ দিনে কয়টা ডিম খেতে পারবেন সেটা নির্ভর করবে তার শারীরিক অবস্থার ওপর। একজন পুরোপুরি সুস্থ মানুষ প্রতিদিন একটা ডিম অনায়াসে খেতে পারবেন। ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন একটা ডিম খেতে পারবেন। এ ছাড়াও ২-৩ টি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারবেন প্রতিদিন। ৪০ বয়সের বেশি যারা তারা সতর্কতার জন্য চাইলে সপ্তাহে ৪ দিন ডিমের কুসুমসহ এবং বাকি ৩ দিন ডিমের কুসুম ছাড়া সাদা অংশ খেতে পারবেন।

যাদের রক্তের চর্বি বেশি, কোলেস্টেরলের সমস্যা, কিডনির সমস্যা ইত্যাদি অন্য যেকোনো ধরনের সমস্যা আছে তাদের শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে তারা কী পরিমাণ ডিম খেতে পারবেন। দেখা যায়, অনেক সময় রোগীকে ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে সাদা অংশ খেতে বলা হয়। আবার কিছুদিন ডিমের কুসুমসহ খেতে বলা হয়। এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ডিম খেতে হবে।

যারা জিম করেন অথবা অ্যাথলেটর তারা দিনে অতিরিক্ত ৭-৮টা পর্যন্ত ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। ডিমের কুসুম কম খেতে বলা হয় কারণ এটির জন্য কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। ডিমের সাদা অংশে অ্যালবুমিন থাকে, যা শরীরের জন্য ভালো।

 

Comments

The Daily Star  | English
yunus calls on youth to join politics

Yunus urges young people to engage more in politics

Yunus made the call when a group of young political activists from different political parties of Norway called on him at the state guest house Jamuna today

1h ago