‘সুপারফুড’ কিনোয়ার উপকারিতা, কীভাবে ও কতটুকু খাবেন

কিনোয়ার উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

সুপারফুড হিসেবে পরিচিত কিনোয়া এখন দেশের অনেকের খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। তবে এখনও অনেকে এটির উপকারিতা এবং খাওয়ার পরিমাণ ও নিয়ম জানেন না।

চলুন জেনে নিই এএমজেড হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডের পুষ্টি, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক ডিজিজ কনসালটেন্ট ডা. মো. জয়নুল আবেদীন দীপুর কাছ থেকে।

কিনোয়া কী

ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, কিনোয়া হলো এক ধরনের ছদ্মশস্য। এগুলো এক ধরনের বীজ হলেও শস্যের মতো ব্যবহার করা যায়। এই শস্য দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিয়ান অঞ্চলে হাজার বছর ধরে খাওয়া হচ্ছে। কিনোয়া গ্লুটেনমুক্ত, প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং অত্যন্ত পুষ্টিকর।

কিনোয়ার বেশ কয়েকটি ধরন আছে। যেমন-

সাদা কিনোয়া: সবচেয়ে নরম ও হালকা স্বাদের। এটি রান্না করা সহজ।

লাল কিনোয়া: সালাদ ও বেকিংয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। কারণ এটি শক্ত থাকে।

কালো কিনোয়া: সবচেয়ে বেশি চিবানোর মতো এবং হালকা মিষ্টি স্বাদের।

 কিনোয়ার পুষ্টিগুণ

কিনোয়াকে 'সুপারফুড' বলা হয় কারণ এতে প্রচুর প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। প্রতি ১ কাপ রান্না করা কিনোয়ায় ৮ থেকে ৯ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। এছাড়া ভিটামিন ও মিনারেল আছে যেমন- ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন বি ও ই। এছাড়াও আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট:  কোয়েরসেটিন ও কেমফেরল।

কিনোয়া কীভাবে এবং কতটুকু খাবেন

ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, কিনোয়া বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। যেমন- ভাতের বিকল্প হিসেবে, সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে, সকালের নাশতায় ওটমিল বা স্মুদি বোলের সঙ্গে, স্যুপে ব্যবহার করে। এছাড়া রান্না করা কিনোয়া দই বা দুধের সঙ্গে খেতে পারেন।

পরিমাণ

প্রতিদিন ১/২ থেকে ১ কাপ রান্না করা কিনোয়া খাওয়া ভালো। যারা প্রথমবার খাচ্ছেন, তারা কম পরিমাণে শুরু করতে পারেন (১/৪ কাপ)।

কিনোয়ার উপকারিতা

১. কিনোয়া উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ। এতে ৯টি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড আছে, যা শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

২. যেহেতু কিনোয়া গ্লুটেনমুক্ত, যারা গ্লুটেন সেনসিটিভ বা সিলিয়াক রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য কিনোয়া উপযুক্ত।

৩. কিনোয়া ওজন কমাতে সহায়তা করে। ফাইবার ও প্রোটিন থাকার কারণে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

৪. এটি হৃদযন্ত্রের জন্যও ভালো। কিনোয়াতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

৫.  কিনোয়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো।

৬. কিনোয়া হজমে সহায়ক। উচ্চ ফাইবার থাকার কারণে এটি হজম ভালো রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

সতর্কতা

কিনোয়া খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে। কিনোয়াতে স্যাপোনিন থাকার কারণে কিছু মানুষের জন্য হজমে সমস্যা হতে পারে। রান্নার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিলে এটি এড়ানো যায়। বেশি পরিমাণে খেলে পেটে গ্যাস বা ফোলাভাব হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। অতিরিক্ত কিনোয়া খেলে কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যদি শরীরে অক্সালেট সংবেদনশীলতা থাকে।

ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, এসব সমস্যা এড়ানোর জন্য যদি নতুন করে কিনোয়া খেতে শুরু করেন, তবে অল্প পরিমাণে শুরু করুন এবং শরীরের প্রতিক্রিয়া দেখুন। তারপর চাইলে বেশি পরিমাণ খেতে পারেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

16h ago