ফার্মগেটের বাহারি স্বাদের স্ট্রিটফুড

ফার্মগেটের স্ট্রিটফুড
ছবি: আসরিফা সুলতানা রিয়া

এককালে আনন্দ সিনেমা হলের জন্য নামডাক পেয়েছিল ফার্মগেট। এখনো সেই জৌলুস রয়ে গেছে দালানকোঠা, রাস্তাঘাটের আড়ালে। প্রতিদিন কত শত মানুষের মিলন ঘটে এই জায়গাটিতে। তাদের খিদে মেটাতে নানা আয়োজনও চোখে পড়ে ছুটে চলা নগরীর রাস্তার পাশে।

কিছুক্ষণের বিরতি নিয়ে চারপাশে তাকালে দেখা মিলবে গরম তাওয়ায় কোথাও ভাজা হচ্ছে মাংসের টুকরো, কোথাও হালকা আঁচে সেঁকা হচ্ছে পাউরুটি। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে গালভর্তি করার ইচ্ছে হলে ঢুঁ মারতে পারেন ফার্মগেটের গলিতে।

১০ টাকা থেকে ১০০ টাকার নোটে বাহারি স্বাদের খাবার মিলবে এখানে। যাদের মুরগির মাংসের প্রতি বিশেষ ভালোবাসা আছে অন্তরে, আনন্দ সিনেমা হলের সামনেই তাদের জন্য এক জায়গাতে রয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায় চিকেন বার্গার, চিকেন চাউমিন, ৮০ টাকায় চিকেন সাব-স্যান্ডউইচ, ৫০ থেকে ৮০ টাকায় চিকেন শর্মা। মানে পুরো মুরগিময় দোকান আর কি!

ফার্মগেটের স্ট্রিটফুড
ছবি: আসরিফা সুলতানা রিয়া

তার পাশেই আবার পাওয়া যাবে মিট বক্সের স্বাদ। ৭০ থেকে ১২০ টাকায় নানা পদের মিট বক্স, ৫০ থেকে ৮০ টাকায় মিট মিডলি পাস্তা, ১০০ থেকে ২০০ টাকায় ক্রাঞ্চি চিপারস ফিস্ট, ৫০ টাকায় টোস্টেড গ্রিল স্যান্ডউইচ ছাড়াও আছে নানা খাবার।

খেতে খেতে গলা শুকিয়ে গেলে সামনে এগোলেই দেখা যাবে লেমন মামার কারসাজি। সিরাপ-ফলের স্বাদে নানা পানীয় মিলবে এখানে। লেমন সোডার সঙ্গে চাইলে রোজ সিরাপ, ব্লু ককটেইল সিরাপ, পুদিনা মাসালা সিরাপ, স্ট্রবেরি সিরাপ, ক্রিম সোডা মিশিয়ে নিতে পারেন। দাম পড়বে ৫০ টাকা করে। আম, লিচু, কমলা, আপেল, স্ট্রবেরি, আঙুর ফলের স্বাদ পেতে চাইলে দাম পড়বে ৩০ টাকা করে।

ঝাল ঝাল চ্যাপা শুঁটকি, চিংড়ি শুঁটকি, ধনিয়াপাতা, ডালভর্তার সঙ্গে পিঠা পাবেন ফার্মগেটের স্ট্রিটফুডের সম্ভারে। নারকেল পুলি, পাটিসাপটা, মালপোয়া, চিতই পিঠের সঙ্গে সেসব চেখে দেখা যাবে ১০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে।

ঝাল না কাটলে মিষ্টিমুখ করতে পারেন গজা, দানাদার, নাড়ু, মোরব্বা, নারিকেল, বাদামি দিয়ে। দাম পড়বে ২৫ থেকে ৭০ টাকা করে। ফেরার সময় ঠোঙায় করে নিতে পারেন ভাজা বাদাম, ছোলা বুট ও শিমবীজ। সব জায়গার মতো এখানকার রাস্তার ধারে পেয়ে যাবেন ছোলা বুট, ঝালমুড়ি, ফুচকা। ৩০ থেকে ১৫০ টাকায় পাবেন গরমাগরম হালিম।

স্ট্রিটফুড খেতে আসবেন আর ভাজাপোড়া খাবেন না তা কি হয় কখনো? রাস্তা ধরে সামনে এগোলে দেখা যাবে খাবারের কারখানা। যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই দেখবেন দোকানের সামনে ভিড়ের জটলা। চপ, পাকোড়া, পুরির গন্ধ পেলে নিজেকে ধরে রাখা দায় বটে।

এখানে মিলবে ৩০ টাকায় চিকেন উইংস, ২০ টাকায় চিকেন চপ, মাশরুম চপ। সঙ্গে ছোট ছোট  শিঙাড়া, পেঁয়াজু, সবজি পাকোড়া, আলুর চপ আর বেগুনিগুলো দেখতে এত সুন্দর লাগে, খেতে না চাইলেও কিনতে অবশ্যই মন চাইবে। একটু সামনে আবার চোখে পড়বে চিংড়ির মাথার চপ। মানে বড় চিংড়িগুলোর মাথা আলাদা করে ভাজা হয়, আবার ছোট চিংড়ি দিয়েও ভাজা হয় চপ। দাম পড়বে ১০ থেকে ২০ টাকা। আবার প্লেটে করে বিক্রি হচ্ছে চানাচুর, ছোলা আর ধনিয়াপাতার সঙ্গে মুড়ি। আহা, এমন ঝালমুড়ি না খেলে চলে? দাম পড়বে ২০ টাকা করে।

লুচি, আলুর দমের সঙ্গে পায়েস খেতে কেমন লাগবে বলুন তো? না খেলে বলবেন কী করে! এই প্লেটারও পেয়ে যাবেন ৬০ টাকা দরে। ভোজনরসিক হলে বড় পাতিলের দিকে চোখ পড়তে পারে কারো কারো। মাংস খিচুড়ি, মুরগি পোলাও, ডিম পোলাওর গন্ধ শুঁকে পৌঁছে যেতে পারেন তার সামনে। পেটে জায়গা থাকলে ভারি খাবার খাওয়া যেতেই পারে।

দেশের রাস্তায় বিদেশি খাবারের স্বাদ দিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় মিলবে এখানে মিটবক্স, নাচোস, চাউমিন, মোমো। কোথাও মিলবে হটডট, মিটবল আর কফি। নাগা পুদিনা, তেতুল টক, মিষ্টি টকের সঙ্গে ফুচকা, ভেলপুরিও পাওয়া যাবে। আর হ্যাঁ, সবশেষে প্যানকেক কিন্তু খাওয়া চাই অবশ্যই।

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago