সুখী হতে গড়ে তুলুন এই ৭ অভ্যাস

ছবি: সংগৃহীত

কর্মব্যস্ত জীবনে নানা উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তায় মন ভারী হয়ে উঠে। কিছু অভ্যাস আয়ত্ত করলে এসবকে দূরে সরিয়ে রেখে পেতে পারেন সুখের নাগাল।

জেনে নিন দৈনন্দিন জীবনে কী কী কাজ করতে পারলে মানসিক প্রশান্তির দেখা পাওয়া যাবে-

নিয়মিত মেডিটেশন

প্রতিদিনকার রুটিনে অনেক কিছু অনিশ্চিত থাকলেও চিন্তা-ভাবনা, মানসিক চাপ যেন অবধারিত বিষয়। মেডিটেশন মনকে শান্ত করতে পারে, মানসিক চাপ মোকাবিলা করে মন-মেজাজ প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। ইদানিং অনেকে সংগীতকে মেডিটেশনের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে নিয়মমাফিক মেডিটেশনের ঝামেলায় যেতে না চাইলে কোনো সমস্যা নেই। ঘুম থেকে উঠে বাড়ির খোলামেলা স্থানে নিরিবিলি কিছুক্ষণ বসে শ্বাস নেওয়া কিংবা পছন্দের বই পড়া, বাবল বাথ নেওয়াও মেডিটেশনের কাজ করতে পারে। কীভাবে মেডিটেশন করলেন তার চেয়ে কতটুকু প্রশান্তি পেলেন সেটাই বড় কথা।

কৃতজ্ঞতাবোধ অনুশীলন

জীবনের যে কোনো কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার অভ্যাস ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, কৃতজ্ঞতাবোধ মানসিক চাপ, বিষণ্নতা কমাতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি মন ভালো রাখতে পারে।

তবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের অভ্যাস গড়ে তোলা খুব একটা সহজ কাজ নয়, এর জন্য প্রয়োজন সময় এবং দৃঢ়তা। প্রথম দিকে কাছের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা যেতে পারে। চাইলে ডায়েরিতে যাদের প্রতি কৃতজ্ঞ তাদের তালিকা লিখে রাখা যেতে পারে।

একাকী থাকার অভ্যাস পরিহার করা

প্রিয় মানুষজনের সঙ্গে সময় কাটালে যেমন আনন্দের অনুভূতি হয়, তেমনি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে। তাই সময় পেলেই বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, ঘুরতে যাওয়ার মতো কাজ করতে পারলে একাকিত্ব দূর হবে এবং মানসিক প্রশান্তির সন্ধান পাওয়া যাবে। সামনাসামনি সাক্ষাতের সুযোগ না হলে টেক্সটিং, ফোনে কথা বলা, ভিডিও কলে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া

মানসিক প্রশান্তি আর শারীরিক সুস্থতা একে অপরের পরিপূরক। একটি ছাড়া অন্যটি পাওয়া সম্ভব নয়। আর এজন্য প্রথমেই শরীরের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেজন্য যেসব বিষয় অনুসরণ করা প্রয়োজন-

ঘুম: মানসিক স্বাস্থ্য ঘুমের ওপর নির্ভরশীল। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম না নিলে মস্তিষ্কের চাপ কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। ঘুম সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে পূর্ণ উদ্যমে কাজ করার শক্তি যোগায়। তাই মানসিক অবসাদ দূর করতে ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।

স্বাস্থ্যকর ডায়েট: খাবার শরীরে পুষ্টি যোগায় এবং শারীরিক কার্যাবলী সম্পাদনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার একদিকে যেমন শরীর সুস্থ রাখে, তেমনি মেজাজ প্রফুল্ল রাখে। পর্যাপ্ত পানিও পান করতে হবে।

ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস প্রত্যেকের থাকা প্রয়োজন। ব্যায়াম মানেই প্রতিদিন জিম করা, ভারি যন্ত্রপাতি উত্তোলন করা নয়। বরং সময় ধরে হাঁটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি চেষ্টা করলে বাড়তি চাপ মাথা থেকে সরে যাবে।

অনলাইন মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকা

দিনের বেশিরভাগ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত থাকেন অনেকেই। নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করে সময় কাটালে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর চাপ পড়ে। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন- নির্দিষ্ট সময় ছাড়া অনলাইনে না থাকা, দিনের শুরু বা শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে বিরত থাকা, অন্য ক্ষেত্রে আনন্দ খুঁজে বের করা।

জার্নালে অনুভূতি প্রকাশ

মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণগুলো মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে জার্নালিং একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ১৫ মিনিট জার্নালিং উল্লেখযোগ্যভাবে চাপ ও উদ্বেগ কমাতে পারে।

হাসিখুশি থাকা

মানসিক প্রশান্তি পেতে হাসির কোনো বিকল্প নেই। নিজেকে খুশি রাখতে পছন্দের টিভি সিরিজ দেখা, গোসলের সময় গান গাওয়া, কাজ করার সময় নাচা সবকিছুই আনন্দ বহিঃপ্রকাশের উপায়। উদ্বেগ কাটাতে চাইলে প্রথমে নিজের প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তবেই নিজেকে খুশি করা যাবে।

সুখ চাইলেই রাতারাতি সুখী হওয়া যায় না। এর জন্য প্রয়োজন অভ্যাস, প্রয়োজন আনন্দে থাকার রসদ। আপনার রুটিনে সুখী হওয়ার কৌশলগুলো আগে যোগ করুন, রপ্ত করুন।

তথ্যসূত্র: সিনেট, ভ্যানটেজ ফিট, সাইকোলজি টুডে 

Comments

The Daily Star  | English

July uprising: The wounds that are yet to heal, one year on

This week marks one year since 15-year-old Md Shahin Alam’s life was forever changed -- not by illness or accident, but by a bullet that tore through his left leg during a rally on August 5, 2024.

15h ago