অন্দরসজ্জায় আবার ট্রেন্ডে বেতের আসবাবপত্র

ছবি: সংগৃহীত

আসবাবপত্র ঘরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আড়ম্বরপূর্ণ আসবাবপত্রের ভিড়ে বেতের তৈরি আসবাবপত্র আপনার ঘরে এনে দিতে পারে স্বকীয়তা। তা ছাড়া গতিময় জীবনে কর্মক্ষেত্র কিংবা জীবনের তাগিদে স্থান পরিবর্তন করতে হয় প্রায়ই। তাই ভারি আসবাবের চেয়ে হালকা, নান্দনিক আর টেকসই আসবাবপত্রের চাহিদা বাড়ছে। সবমিলিয়ে রুচি ও বাজেটের দারুণ এক সমন্বয় বেতের আসবাবপত্র। 

বেতের আসবাব ও অন্যান্য জিনিস তৈরির ইতিহাস বেশ প্রাচীন। সত্তরের দশক থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত আমাদের দেশে বেতের আসবাবের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো। দামে সহজলভ্য আর টেকসই হওয়ার কারণে মধ্যবিত্তদের ঘরের আসবাবপত্র বলতে প্রথমেই আসত বেতের কথা।

বইয়ের সেলফ, টেবিল, রকিং চেয়ার,সোফা সেট, খাট, টুল অধিকাংশ আসবাবপত্রই ছিল বেতের। শুধু মধ্যবিত্ত নয়, অভিজাত শ্রেণির মধ্যেও কদর ছিল বেশ। বেতের আসবাবপত্রের ব্যবহার মাঝখানে খানিকটা কমে আসলেও এখন গৃহসজ্জায় শৌখিনতার ছাপ ফেলতে এবং একইসঙ্গে দাম বিবেচনায় এর ব্যবহার আবার বেড়েছে। তবে নির্মাণশৈলী আর ডিজাইনে যোগ হয়েছে ভিন্নমাত্রা। যারা ভিন্ন আঙ্গিকে নিজের ঘরকে সাজাতে চান তাদের জন্য বেত হতে পারে সেরা।

ছবি: ডেকর আপা

বেতের শোপিস আর আসবাবপত্র আমাদের কাছে বেশ পরিচিত। গ্রামে বা শহরে সব জায়গাতেই বেতের তৈরি পণ্যের চাহিদা রয়েছে বেশ। গ্রামে ঝুড়ি, টুকরি, চালনি, পলো ইত্যাদির ব্যবহার বেশি, অন্যদিকে শহরে সৌখিন পণ্য যেমন- সোফা, চেয়ার, দোলনা, আয়না, বুক সেলফ, ফুলদানি, ওয়ালম্যাট ইত্যাদির ব্যবহার বেশি দেখা যায়। বর্তমানে বেতের ল্যাম্প, ম্যাট, টব, ফুলদানি,ট্রে, কোস্টার, ঝুড়ি বেশ জনপ্রিয়। বেতের তৈরি ছোট ছোট খেলনা শোপিস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

এখন অনেক তরুণ উদ্যোক্তারা বেতশিল্প নিয়ে কাজ করছেন। বেতের সঙ্গে 'মিনিমাল ডিজাইন' বা 'বোহেমিয়ান ট্রেন্ড' এর মিশ্রণে তৈরি নতুন ধরনের আসবাবপত্র শৌখিন মানুষের নজর কাড়ছে। চেয়ার, দোলনা, আয়না থেকে শুরু করে ঘরের প্রায় সব আসবাবপত্রই বেত দিয়ে বানানো যায়। কাঠের কিংবা স্টিলের তৈরি আসবাবপত্রের তুলনায় জায়গাও লাগে কম।

বেতের তৈরি আসবাবপত্রের ফাঁকে ফাঁকে ময়লা জমলে তা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এ ধরনের আসবাবপত্রগুলো পানি না লাগানোই ভালো। বারান্দায় বেতের তৈরি আসবাব থাকলে তা বৃষ্টির সময় পলি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। অন্যান্য আসবাবপত্রের মতো বছরে একবার বার্নিশ করে নিলেই নতুনের মত চকচক করবে বেতের আসবাবপত্র।

ছবি: ডেকর আপা

চাইলে পেইন্ট করে বেতের আসবাবে আনতে পারেন ভিন্নমাত্রা। বেতের ওপর রং করা যায় খুব সহজেই। ২ বার কিংবা ৩ বার রং করলেই ফুটে উঠে ফার্নিচারের সৌন্দর্য।বেতের আসবাবপত্র মেরামতে ঝামেলা নেই বললেই চলে। বাঁধন খুলে গেলে আবার বাঁধিয়ে রং করিয়ে নিলেই নতুনের মতো হয়ে যায়।

বেতের ঘর সাজানোর বিভিন্ন জিনিসপত্র পাওয়া যাবে আড়ং,কেক্রাফট, শতরঞ্জিতে। তাছাড়া চিরচেনা দোয়েল চত্বরে মিলবে বেতের শোপিস। আর সোফা বা সেলফের মতো আসবাবপত্র পেতে যেতে পারেন মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজার, মৌচাক মার্কেট, পান্থপথ, গ্রিন রোড, মাসকট প্লাজা, গুলশান ডিসিসি মার্কেট। তাছাড়া অনলাইনেও পেয়ে যাবেন বেতের আসবাব আর শো পিস।

আসবাবের জগতে গ্রামীণ এই শিল্পটি আধুনিকতার ছোঁয়ায় হয়ে উঠছে দৃষ্টিনন্দন ও অভিজাত। যার ফলে আধুনিক জীবনযাপনে সময়ের সঙ্গে বাড়ছে এর ব্যবহারও।

Comments

The Daily Star  | English

July charter implementation: What notes of dissent could mean

The July National Charter, finalised after weeks of consensus talks, faces a delicate challenge over notes of dissent, most of them from the BNP and its allies.

14h ago