আশা-নিরাশায় চলছে একুশের বইমেলা 

অমর একুশে বইমেলা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান,
অমর একুশে বইমেলা। ছবি: ইমরান মাহফুজ

অমর একুশে বইমেলার সপ্তম দিন চলছে। সন্ধ্যার একটু আগেই সব স্টল ও প্যাভিলিয়নের বাতিগুলো প্রায় একসঙ্গে জ্বলে উঠল। বাহারি রঙের বাতিগুলো মেলাকে রঙিন প্রচ্ছদে রূপ দিয়েছে। 

সরেজমিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট দিয়ে একটু এগুতেই চোখে পড়ে মাথা নুয়ে কী যেন পড়ছেন ষাট বছর বয়সী একজন। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলেন, 'নতুনরা প্রকাশনায় আসবে লিখবে, এটাই আমরা চাই, কিন্তু এত বানান ভুল মানা যায় না। খারাপ লাগে। প্রস্তুতি ছাড়া লেখক ও প্রকাশক উভয়ে সৃজনশীল পরিবেশের অত্যন্ত ক্ষতিকারক।'

কথাগুলো বলছিলেন সোবহান ভূঁইয়া। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও আগ্রহী পাঠক। বইমেলা এলে নতুন প্রকাশক ও লেখকদের অবস্থা যাচাই করেন। এর মাধ্যমে তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির এগিয়ে যাওয়াকে বোঝার চেষ্টা করেন।

পাশে থাকা আরেক পাঠক বলেন, 'মেলাকেন্দ্রিক প্রকাশক ও লেখক আছে, তবে তা হতাশার। বইমেলা এগিয়ে এলে তারা তাড়াহুড়ো করে লেখেন, প্রকাশকও সম্পাদনা বা ভালো করে প্রুফ না দেখেই লেখা প্রকাশ করেন।' 

এ বিষয়ে আগামীর প্রকাশক ওসমান গনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কেবল বইমেলা কেন্দ্রিক প্রকাশক না। আমরা সারাবছর বই প্রকাশ করি। বিশেষ করে বইমেলা শেষ হলে মার্চ-এপ্রিল থেকেই পরের বছরের জন্য কাজ শুরু করি।'
 
'তবে ভালো সম্পাদক ও প্রুফ রিডার পাওয়া যায় না সবসময়। এ কাজটি অনেক কঠিন। বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনে লেখক ও প্রকাশক উভয়কে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করা উচিৎ। নতুনরা বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে ভাববেন। নতুনদের নিয়ে আমি আশাবাদী', যোগ করেন তিনি।

প্রাবন্ধিক অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মেলাকেন্দ্রিক বই প্রকাশ করতে গিয়ে কিছুটা আপস করতে হয়। কিন্তু আমি হতাশ না, আমি বিশ্বাস করি এখন আমাদের বইমেলায় যেভাবে অনেক বেশি বই প্রকাশ পাচ্ছে, তেমনই একদিন গুণগত পরিবর্তনও আসবে।'

ধীরে ধীরে বিক্রি বাড়বে বলে প্রত্যাশা স্টল কর্মীদের। বিক্রি যেমনই হোক, পাঠক-দর্শকে মুখরিত বইমেলা প্রাঙ্গণ। সপ্তম দিনে মেলার ভেতর লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন তরুণ কবি-লেখকরা।

মেলায় প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে- কথা প্রকাশ থেকে হরিশংকর জলদাসের 'বর্ণ', আফসান চৌধুরীর 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিক ইতিহাস', জাগৃতি প্রকাশনী থেকে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর 'রাষ্ট্র ও সংস্কৃতি', অনন্যা থেকে ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস 'তেঁতুল পাতায় নয়জন', আগামী প্রকাশনী থেকে হাসনাত আব্দুল হাইয়ের উপন্যাস 'লড়াকু পটুয়া', শুদ্ধস্বর থেকে আবদুস শাকুরের 'সাংগীতিক সাক্ষরতা', শিখা প্রকাশনী থেকে মুহাম্মদ বিন এমরানের 'আলোবতীর কালো খাতা', মিজান পাবলিশার্স থেকে আলী ইমামের 'রাজা গেল আকাশে', রোদেলা প্রকাশনী থেকে সরদার ফজলুল করিমের 'সঙ্গ প্রসঙ্গের লেখা' এবং গাজী মুনসুর আজীজের 'অজানা অজন্তা'।  

Comments

The Daily Star  | English

No active militant presence in Bangladesh: home adviser

The reports of suspected extremists' deportation from Malaysia shows no links to local terrorist networks, he says

32m ago