টিভিতে লাইভ চলাকালে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে ভারতের সাবেক এমপিকে হত্যা

১৩ এপ্রিল পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে আতিক আহমেদ। ছবি: রয়টার্স

অপরহণের অভিযোগে অভিযুক্ত ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফ আহমেদকে টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার চলার মধ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ প্রহরায় ২ ভাইকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছিল। ঘটনার সময় তারা পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন।

আতিক আহমেদ সমাজবাদী পার্টির একজন বিধায়ক ছিলেন। পাঁচবারের বিধায়ক আতিক ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে এমপিও হয়েছিলেন।

আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

তাদের হত্যা করার ভিডিও ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্দুকধারী ব্যক্তি সাবেক আইনপ্রণেতা আতিক আহমেদের ঘাড়ের ওপর দিয়ে চোখ ও কানের মাঝামাঝি অংশে বন্দুক তাক করে গুলি করছেন।

কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তার ভাই আশরাফ আহমেদকেও গুলি করা হয়।

আরেকটি ফুটেজে দেখা গেছে, ১ বন্দুকধারী ২ ভাইয়ের মাটিতে পড়ে থাকা দেহের ওপর একের পর এক ‍গুলি করছেন।

কয়েক মিনিটেই ২ ভাই মারা যান। পুলিশ দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে আটক করে।

গণমাধ্যমে আসা সংবাদ অনুসারে, আততায়ীরা সাংবাদিকের বেশে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। হত্যাকাণ্ডের পরপরই ১ ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেন। বাকি ২ জনকে পুলিশের কর্মকর্তারা আটক করেন।

শনিবার সন্ধ্যায় উত্তর প্রদেশ রাজ্যের প্রয়াগরাজ শহরের একটি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাতকড়া পরানো অবস্থায় ২ ভাইকে নিয়ে আসা হয়। তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় অপরাধ চক্রের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ আছে। সে সময় সেখানে সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনায় পুলিশের ১ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সহিংস বিক্ষোভের আশঙ্কায় রাজ্যজুড়ে ৪ জনের বেশি ব্যক্তি জমায়েত হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে রাজ্য সরকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, 'রাজ্য সরকার ভূমি দখল ও খুনের সঙ্গে জড়িত বড় একটি মাফিয়া চক্রের ২ সদস্য আতিক আহমেদ ও আশরাফ আহমেদের হত্যাকাণ্ডের পর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আমরা চাই না, কোনো ধরনের বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠুক।'

বিজেপির নিয়ন্ত্রণাধীন রাজ্য সরকার এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

গত সপ্তাহে ঝাঁসি শহরে একটি 'এনকাউন্টারে' চলাকালে পুলিশের গুলিতে মারা যান আতিক আহমেদের ছেলে। তিনিও একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি ছিলেন।

গত ৬ বছরে এ ধরনের উত্তর প্রদেশের পুলিশ মোট ১৮০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে এভাবে বিচারবহির্ভূত প্রক্রিয়ায় হত্যা করেছে।

প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব এক টুইট বার্তায় তার দলের সাবেক সদস্যের হত্যার ঘটনার সমালোচনা করেন। তিনি একে উত্তর প্রদেশে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিজেপি সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে অভিহিত করেন।

'পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে একজনকে গুলি করে হত্যা করা সম্ভব হলে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার কী হবে?' প্রশ্ন তোলেন যাদব।

Comments

The Daily Star  | English

Budget fails to reflect spirt of discrimination-free society: Nahid Islam

The NCP leader slates lack of vision on inequality, jobs and education

24m ago