নিরাপত্তায় জোর জিনপিংয়ের, জিরো কোভিড নীতি শিথিল না করার ইঙ্গিত

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইঙ্গিত দিয়েছেন, তার বিতর্কিত জিরো কোভিড নীতি সহসাই শিথিল করা হবে না। নিরাপত্তার দিকে মনোনিবেশ করে বিশ্বমানের একটি সামরিক বাহিনী তৈরির গতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কংগ্রেস শেষে ৬৯ বছর বয়সী শি জিনপিং তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইঙ্গিত দিয়েছেন, তার বিতর্কিত জিরো কোভিড নীতি সহসাই শিথিল করা হবে না। নিরাপত্তার দিকে মনোনিবেশ করে বিশ্বমানের একটি সামরিক বাহিনী তৈরির গতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বেইজিংয়ে আজ রোববার স্থানীয় সময় সকালে সপ্তাহব্যাপী কমিউনিস্ট পার্টির ঐতিহাসিক কংগ্রেস শুরুর সময় এসব কথা বলেন শি জিনপিং। 

বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  

কংগ্রেস শেষে ৬৯ বছর বয়সী শি জিনপিং তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেটি হলে মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক হিসেবে তার অবস্থান পাকাপোক্ত হবে।

চীনের রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সারাদেশ থেকে প্রায় ২ হাজার ৩০০ প্রতিনিধি এই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।

২ ঘণ্টার কিছু কম সময়ব্যাপী বক্তব্যে শি জিনপিং ২০১৭ সালের পার্টি কংগ্রেসের পর থেকে গত ৫ বছরকে 'অত্যন্ত অস্বাভাবিক' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, চীনকে অবশ্যই কষ্টের বোধকে শক্তিশালী করতে হবে, বিপদের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, বিরূপ দিনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এবং বড় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষমতা জোরদার করার, খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত করা, দুর্যোগ মোকাবিলা করার ক্ষমতা উন্নত করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার আহ্বান জানান।

শি জিনপিং তাইওয়ানের স্বাধীনতা-বিরোধী অবস্থান ব্যক্ত করার পর কংগ্রেস করতালিতে ভেসে যায়।

কাজের প্রতিবেদনে জিনপিং ৮৯ বার 'নিরাপত্তা' শব্দটি ব্যবহার করেন।  

তৃতীয় মেয়াদে জিনপিংয়ের নীতিতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির লি কুয়ান ইয়ু স্কুল অফ পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক আলফ্রেড উ বলেন, 'চীনের অর্থনীতি ধীর হয়ে যাওয়ায় জিনপিং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে বৈধতার ভিত্তিকে নিরাপত্তার দিকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।'

'রূপক অর্থে তিনি বলেতে চাচ্ছেন, চীন অনেক বিপদের মুখোমুখি, একটি যুদ্ধের মতো অবস্থায় রয়েছে এবং এক্ষেত্রে তিনিই ত্রাণকর্তা। এই বর্ণনার মাধ্যমে তিনি মানুষকে তার চারপাশে একত্রিত করতে পারেন,' মত দেন আলফ্রেড উ।

চীন বারবারই জিনপিংয়ের জিরো কোভিড কৌশল ধরে রাখার ওপর জোর দিয়েছে। যদিও চীনা নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের আশা ছিল, শিগগির বেইজিং এই নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। এই নীতি কোভিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও ব্যাপক হতাশা তৈরি করেছে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছে।

কিন্তু কংগ্রেসে জিনপিং ইঙ্গিত দিয়েছেন, শিগগির এ নীতি থেকে সরবেন না তিনি।

তিনি বলেন, 'আমরা জনগণের আধিপত্য এবং জীবনের গুরুত্ব মেনে চলেছি, জিরো কোভিড কৌশল মেনে চলেছি এবং মহামারির সামগ্রিক প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বড় ধরনের ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করেছি।'

'আমাদের অবশ্যই একটি উচ্চ-স্তরের সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে', বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট।

 

Comments