জীবন বাজি রাখা জীবন

নিউ মার্কেটে আগুন, নিউ মার্কেট, নিউ ‍সুপার মার্কেট, অগ্নিকাণ্ড,
মো. জীবন ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

আগুন লেগে পুড়তে থাকা দোকানের ভেতরে ক্যাশ বাক্সতে আছে মালিকের ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। জীবন বাজি রেখে সেই টাকা উদ্ধার করে মালিকের হাতে তুলে দিলেন দোকানের কর্মচারী।

সিনেমার কোনো নায়কের গল্প মনে হতে পারে। কিন্তু, আসলেই এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দোকান মালিক।

আগুন ও ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বাস্তবের এই নায়ক মো. জীবন (২২)। তিনি নিউ মার্কেটের তৃতীয় তলার নেক্সট লেভেল দোকানের কর্মচারী।

জীবন ৪ মাস আগে ১২ হাজার টাকা বেতনে ওই দোকানে কাজ নেন। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিয়ানগরে বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন।

আজ শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে জীবন বলেন, 'আমরা ১৪ জন দোকানটিতে কাজ করি। আজ ভোররাত ২টা ২০ মিনিটে দোকান বন্ধ করেছি। আমাদের দোকানটি তৃতীয় তলার পেছনের দিকে। এটি মূলত ঘড়ি, সানগ্লাস, ওয়ালেট, চশমার দোকান।'

তিনি বলেন, 'আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মালিক আমাদের কল করে জানান, মার্কেটে আগুন লেগেছে। পরে মালিকসহ আমরা ৭-৮ জন মার্কেটে আসি। তখন জানতে পারি, দোকানের ক্যাশ বাক্সে প্রায় ২ লাখ টাকা রয়েছে। মালিক সবার কাছে টাকা উদ্ধারের অনুরোধ জানান, নিজেও চেষ্টা করেন।'

'পরে আমাদের অনুরোধে গ্লাস ভেঙে দেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তারপর আমি ভাঙা জানালা দিয়ে দোকানে ঢুকি। তখনো আমাদের দোকানে আগুন সেভাবে লাগেনি। ক্যাশ বাক্সের তালা খুলে ড্রয়ারসহ বের করে জানাল দিয়ে মালিকের কাছে ছুঁড়ে দেই। ততক্ষণে দোকানে অনেক ধোঁয়া তৈরি হয়ে যায়। ধোঁয়ায় আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। দ্রুত নামার চেষ্টা করি। কিন্তু, ভাঙা গ্লাসে আমার পা কেটে যায়,' বলেন তিনি।

এত বড় ঝুঁকি কেন নিলেন, জানতে চাইলে জীবন বলেন, 'তখন আমার কাছে শুধু মনে হয়েছিল, টাকাগুলো বাঁচিয়ে মালিকের হাতে তুলে দেওয়া আমার দায়িত্ব। ওই মুহূর্তে সেটাই আমার কাছে বড় কাজ মনে হয়েছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েছি।'

দোকানটির ম্যানেজার আল-আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবন আমাদের ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা রক্ষা করেছেন। আমরা চাই তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।'

Comments

The Daily Star  | English
National election

Political parties must support the election drive

The election in February 2026 is among the most important challenges that we are going to face.

5h ago