পুলিশের ‘ধাওয়ায়’ ট্রেনের নিচে পড়া সেই পরিতোষের পা কেটে ফেলতে হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত

জয়দেবপুর জংশনের পাশে পুলিশের ধাওয়ায় ট্রেনে কাটা পড়া লেবু বিক্রেতা পরিতোষ চক্রবর্তীর (৪৫) একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

গত ৯ জানুয়ারি গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের জয়দেবপুর জংশন রেললাইন সংলগ্ন স্থানে পুলিশের 'ধাওয়া'য় দৌড় দিলে ট্রেনে কাটা পড়েন পরিতোষ।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে টেলিফোনে কথা হয় পরিতোষের স্ত্রী পূর্ণিমার সঙ্গে। তিনি বলেন, 'লেবু বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের ধাওয়ায় আমার স্বামী ট্রেনে কাটা পড়ে। এখন পঙ্গু হাসপাতালে। আজ তিন বারের মতো অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। আরও দুই বার অপারেশন হয়েছে। স্বামীর বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলেছে। আমার এক ছেলে। শ্বশুড়, শাশুড়ি আছে সংসারে। অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। এখন কী করব? আমাদের কে দেখবে।' আহাজারি করছিলেন পূর্ণিমা।

গতকাল বুধবার রাতে পরিতোষ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, যেদিন ট্রেনে পা কাটা গেছে, সেদিন রাত ২টায় পায়ের অপারেশন হয়েছে। শুনেছি, ডাক্তার পা রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুই দিন পর (রোববার) অপারেশন করে হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। আমাকে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। যেই পুলিশ আামাকে ধাওয়া করছিল, তিনি ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। 'সে জীবন শেষ করে দিছে, টাকা দিয়ে কী হবে? তাকে টাকা ফেরত দিয়েছি।'

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক লেবু বিক্রেতা বলেন, পরিতোষ নাটোর থেকে লেবু এনে বিক্রি করেন। ঘটনার দিন, রেলগাড়ি আসছে, আর পুলিশও দৌড়ানি দেয়।

আহত পরিতোষ নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার নওগাঁদা গ্রামের অরুন চক্রবর্তীর ছেলে।

জয়দেবপুর জংশন রেলওয়ে পুলিশের এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসায় ঢাকায় পাঠানো হয়।

পরিতোষের শাশুড়ি জানান, পরিতোষ রেলগেটে মালামাল (লেবু) প্যাকেট করছিলেন। হঠাৎ পুলিশ গিয়ে পেটাতে শুরু করে। পুলিশ ধাওয়া দিলে সে দৌড় দিলে দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে ।

উপপরিদর্শক মো. জহির এ বিষয়ে ডেইলি স্টারকে আজ বুধবার বলেন, 'সেদিন কোনো ধাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আমার রেলক্রসিংয়ের পাশে ডিউটি ছিল। পুলিশ দেখে কয়েকজন লোক ছোটাছুটি শুরু করে। এসময় একজন ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে। ওসিকে জানালে উনি আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই। যতটা সম্ভব সহায়তার চেষ্টা করি।'

Comments

The Daily Star  | English

Consensus commission: Fresh caretaker models on the table now

The National Consensus Commission, BNP, and Bangladesh Jamaat-e-Islami have each proposed separate methods for appointing the chief adviser to caretaker government.

7h ago