বেইলি রোডে আগুন: স্ত্রী ও ২ সন্তানের মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন আশিক
নোয়াখালীর ছেলে আশিক ও তার স্ত্রী নাজিয়া গত ১৫-২০ দিন আগে মালয়েশিয়া বেড়াতে যান। সেখানে ছিলেন এক প্রবাসী বন্ধুর বাড়িতে। গত ৪-৫ দিন আগে ওই বন্ধু তার পরিবার নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ওই বন্ধু তার দুই মেয়েকে নিয়ে বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় যান। নাজিয়া তার দুই ছেলে আরহান ও আবিয়াতকে নিয়ে সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা করতে যান।
রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সাততলা ওই ভবনে আগুন লাগে। সে সময় ওই রেস্টুরেন্ট ও ভবনে অবস্থানরত সবাই ছোটাছুটি শুরু করে।
ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবনে ছোট ছেলে আবিয়াত আহমেদ (৩) হারিয়ে যায়। সে সময় বড় ছেলে আরহানকে (৭) বুকে ধরে নাজিয়া স্বামী আশিককে ফোন করে জানায়, তারা আগুনের ভেতর আটকে পড়েছেন, আবিয়াতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
খবর শুনে আশিক ঘটনাস্থলে এসে দেখেন পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ভবনের সিঁড়ি থেকে আবিয়াত এবং ভবনের ভেতর থেকে নাজিয়া ও বড় ছেলে আরহানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আজ শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুপুর ১টার দিকে নাজিয়া আক্তার ও দুই ছেলের মরদেহ নোয়াখালী গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। বিকেল ৩টার দিকে জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
কথাগুলো দ্য ডেইলি স্টারকে জানান নাজিয়ার খালা শাশুড়ি ও আশিকের খালা জোসনা আরা বেগম।
দুপুরে নোয়াখালী জেলা শহরের পশ্চিম মাইজদী মহল্লায় আশিকদের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়। স্ত্রী ও দুই ছেলে হারিয়ে নির্বাক তরুণ ব্যবসায়ী আশিক।
আশিকের বড় ভাইয়ের স্ত্রী হাছিনা মমতাজ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আশিক ও নাজিয়া ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে প্রায় ১০ বছর আগে বিয়ে করেন। আশিক ঢাকায় ব্যবসা করেন, নাজিয়াও তার সঙ্গে ব্যবসায়ে জড়িত ছিলেন। তারা বেইলি রোডের একটি বাসায় থাকতেন। তাদের বড় ছেলে আরহান আহমেদ বেইলি রোডের মাস্টার মাইন্ড স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল।
Comments