লাইন বেঁকে নয়, বিয়ারিং প্লেট খুলে নেওয়ায় বিজয় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত: তদন্ত কমিটি
চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের নয়টি বগি গত রোববার কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এলাকায় লাইনচ্যুত হয়।
সেদিন রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, সূর্যের তাপে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে।
কিন্তু ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বলছে, বহিরাগতরা রেলসেতুর বিয়ারিং প্লেট খুলে নিয়েছিল, তাই বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুমিল্লায় লাইনচ্যুত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সেতুর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকেও ট্রেন লাইনচ্যুতের আরেকটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা।
ওই ঘটনায় প্রায় ৫০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করেনি রেলওয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির এক সদস্য আজ বুধবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা দুর্ঘটনাস্থলের একটি সেতুর কয়েকটি বিয়ারিং প্লেট খুঁজে পাইনি। বহিরাগতরা সেগুলো খুলে নিয়েছে। ওই বেয়ারিং প্লেটগুলো খুলে নেওয়াতে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে।'
'ঘটনাটি নাশকতা, নাকি অন্যকিছু তা নিশ্চিত হতে সময় লাগবে। আমরা জেনেছি এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চার কিশোরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে,' বলেন তিনি।
কিন্তু এই রেল কর্মকর্তা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
এদিকে, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) এবং রেলওয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলের কাছ থেকে তিনটি বিয়ারিং প্লেট উদ্ধার করেছে।
আরএনবি লাকসাম জংশনের চিফ ইনসপেক্টর সালামত আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ঘটনার প্রমাণ হিসেবে প্লেটগুলো হেফাজতে রেখেছি।'
এর আগে এই দুর্ঘটনার কারণ শনাক্ত করতে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম।
রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ট্রাফিক অফিসার (ডিটিও) আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি যদিও তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা দেয়নি।
ডিটিও আনিসুর রহমান বলেন, 'আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য কাজ করছি।'
তবে প্রতিবেদন দাখিলের আগে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অপরদিকে এ ঘটনায় লাকসাম থানায় মামলা করেছে রেলওয়ে।
তাছাড়া, গ্রেপ্তার চার কিশোরকে কুমিল্লার একটি আদালত কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
Comments