ধান চাষিদের বিনামূল্যে পরামর্শ দিতে ব্রির কল সেন্টার চালু

ধান উৎপাদনে সার ব্যবস্থাপনা, আগাছা দমন, বালাই ব্যবস্থাপনা কিংবা সেচ সংক্রান্ত যাবতীয় পরামর্শ দিতে কল সেন্টার চালু করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কল সেন্টারটি ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে প্রস্তুত থাকবে। কৃষকরা (০৯৬৪৪৩০০৩০০) নম্বরে ফোন করে বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারবেন।
আজ বুধবার গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেবার উদ্বোধন করা হয়।
ব্রির মহাপরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, বৈরী আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ধান উৎপাদনে প্রতিনিয়ত কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এসব সমস্যা সমাধানে করণীয় সম্পর্কে জানাতে 'ধানের হেল্পলাইন' নামে ২৪ ঘণ্টার কল সেন্টার চালু করা হলো। ব্রির এগ্রোমেট ল্যাবের বিজ্ঞানীরা সরাসরি এই সেবা প্রদান করবেন।
খালেকুজ্জামান উল্লেখ করেন, ১৯৭০ থেকে এখন পর্যন্ত ব্রি ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে আটটি হাইব্রিড। ব্রি উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে কৃষকের দৌড়গোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে, যে কারণে বর্তমানে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়।
ব্রির পরিচালক (গবেষণা) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু জমির পরিমাণ ছিল ২০ শতাংশ, এখন তা ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। এই সময়ে জনসংখ্যা বেড়েছে আড়াই গুণ, অন্যদিকে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ।
দেশে এখনো ২৫ শতাংশ এলাকা পতিত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি এসব জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার তাগিদ দেন।
ধান উৎপাদনের ধারা বজায় রাখতে হলে কোনোক্রমেই ধানি জমির পরিমাণ ছয় দশমিক দুই মিলিয়ন হেক্টরের নিচে আনা যাবে না, যোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ধানি জমির পরিমাণ প্রায় ১১ দশমিক সাত মিলিয়ন হেক্টর।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৭১ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় ব্রি মাত্র ৩৭টি জাত উদ্ভাবন করে, কিন্তু ১৯৯১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় ৮৪টি ধানের জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে গবেষকরা জিংক, আয়রন ও পুষ্টিসমৃদ্ধ জাত উদ্ভাবনে মনোযোগী হয়েছেন।
'আমাদের কাছে নয় হাজার ৬০০ দেশি ধানের জাত সংরক্ষিত আছে, যা গবেষণার রশদ হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে,' বলেন তিনি।
Comments