‘নারীর কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলাম, কিন্তু কিছু করার ছিল না’

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি এবং সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার বাদী হেকমত আলী দ্য ডেইলি স্টারের কাছে ওই বিভীষিকাময় রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। ডাকাতির ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি এখন শয্যাশায়ী।
টাঙ্গাইলে ডাকাতির কবলে পড়া বাসটি। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি এবং সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার বাদী হেকমত আলী দ্য ডেইলি স্টারের কাছে ওই বিভীষিকাময় রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। ডাকাতির ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি এখন শয্যাশায়ী।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সলিমপুর গ্রামের ফল ব্যবসায়ী হেকমত (২৮) তার স্ত্রী, দুই সন্তান এবং শাশুড়িকে নিয়ে ঈগল পরিবহনের ওই বাসে ঢাকা যাচ্ছিলেন। যাত্রাবাড়ীতে নেমে এক আত্মীয়ের সঙ্গে তার বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজে কানের অপারেশন করানো।

তিনি বলেন, 'আমাদের গাড়িটি ছেড়েছিল রাত ৮:২৩ মিনিটে। আমরা বসেছিলাম গাড়ির মাঝের সিটগুলোতে। রাত পৌনে ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে সিরাজগঞ্জে কয়েকটি জায়গা থেকে ভাগ হয়ে ডাকাতরা বাসে ওঠেন।

'রাত ১টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ডাকাতরা ধারালো চাকু এবং কাচির মুখে চালককে সরিয়ে দিয়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয়। চলন্ত অবস্থায় যাত্রীদের গায়ের কাপড় ছিঁড়ে তারা আমাদের হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে। ডাকাত দলের একজন আমার কানে জোরে থাপ্পড় দেয়। তারা আমার কাছ থেকে নগদ ২২ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোন এবং আমার স্ত্রী ও শাশুড়ির গয়না ছিনিয়ে নেয়।'

'আমাদের পেছনের সিটে বসা এক নারীকে ওরা নির্যাতন করছে আমি তা টের পাচ্ছিলাম কিন্তু কিছু করার ছিল না। সামনের সিট থেকেও নারীর কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলাম।'

তিনি বলেন, 'রাত সাড়ে ৩টার দিকে ডাকাতরা টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাড়িসহ আমাদের ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার করে। পুলিশ এসে প্রথমে বাসের স্টাফদের নিয়ে যায় এবং পরে আমাদেরকেও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।'

তিনি বলেন, 'ঘটনার বর্ণনা শুনে মধুপুর থানার পুলিশ আমাদের কাউকে মামলা করতে বলে৷ আমি ঘটনার সাক্ষী হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে বাদী হতে বলে। পরে আমি রাজি হই। পরে সকাল ৯টায় বাড়ি যেতে পুলিশ আমাদের বিআরটিসির একটি বাসে তুলে দেয়' যোগ করেন হেকমত।

 

Comments