প্রাইভেটকারে গার্ডার: ক্রেন চালাচ্ছিলেন হেলপার রাকিব

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন এলাকায় ক্রেন থেকে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ভায়াডাক্ট পড়ে ৫ জনকে চাপা দেওয়ার সময় সেটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী (হেলপার) রাকিব হোসেন। আর বাইরে থেকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন মূল অপারেটর বা ক্রেনচালক আল আমিন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

এর আগে বুধবার এ ঘটনায় ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাট থেকে ক্রেনের চালকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

ছবি: সংগৃহীত

খন্দকার আল মঈন জানান, ক্রেনের মূল অপারেটর মো. আল আমিন। তার হালকা গাড়ি চালানোর অনুমোদন থাকলেও ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নেই। ২০১৬ সালে ক্রেন চালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ২-৩টি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করেন। এরপর ২০২২ সালের মে মাসে বিআরটি প্রকল্পে ক্রেন অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেন। গ্রেফতার রাকিব ৩ মাস আগে ওই প্রকল্পের ক্রেন হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন। 

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গত ১৫ আগস্ট বিআরটি প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না গেজুবা গ্রুপ কোম্পানির (সিজিজিসি) তত্ত্বাবধানে ক্রেন দিয়ে প্রজেক্টের গার্ডার তোলার কাজ চলাকালীন দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনায় ক্রেনের চালক মো. আল আমিন ও হেলপার রাকিব হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি থেকে ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহের ওয়ার্ক অর্ডার পায় ইফসকন নামের একটি প্রতিষ্ঠান যার সত্ত্ব¡ধিকারী মো. ইফতেখার হোসেন ও হেড অব অপারেশন মো. আজহারুল ইসলাম মিঠুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারী যন্ত্রপাতি ইফসকনের কাছে বড় ক্রেন না থাকায় তারা থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান বিল্ড ট্রেড কোম্পানির কাছে থেকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ক্রেনটি ভাড়া নেয়। 

এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে থাকা ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিকম্যান আফরোজ ও রুবেল এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলীকে প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের এবং হেভি ইকুইপমেন্ট সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সিজিজিসির প্রকিউরমেন্ট অফিসার মঞ্জুরুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, দুর্ঘটনার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ করছে। এখানে আর কারও কোনো গাফিলতি রয়েছে কি না সেটা দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া যাদের যোগ্যতা নেই তারা কীভাবে এখানে কাজ করছেন, কীভাবে তাদের নিয়োগ দেওয়া হলো সে বিষয়টিও খুঁজে দেখা হচ্ছে।

গত ১৫ আগস্ট সোমবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন এলাকায় ক্রেন থেকে বিআরটি প্রকল্পের ভায়াডাক্ট পড়ে গেলে এর নিচে একটি প্রাইভেটকার চাপা পড়ে। এতে ওই প্রাইভেটকারে থাকা ৫ জন মারা যান। গাড়িতে থাকা নবদম্পতি রেজাউল করিম হৃদয় (২৪) ও রিয়া মনি (২১) আহত হলেও মারা যান হৃদয়ের বাবা মো. ‍রুবেল মিয়া (৬০), রিয়া মনির মা মোছা. ফাহিমা (৩৭), খালা ঝর্ণা বেগম (২৬) এবং খালাতো ভাইবোন  জান্নাতুল (৬) ও মো. জাকারিয়া (৪)।

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Parties agree on chief justice appointment, limiting emergency powers

Manifesto provision allows top-two judge choice; cabinet to approve emergency declaration

24m ago