‘চাঁদা না পেয়ে’ যুবদল নেতাকে গুলি, ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ

সাইফুল ইসলাম সাইফ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম সাইফকে তুলে নিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি এবং দিতে না পারায় হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বায়েজিদ বোস্তামী থানার সাবেক ওসিসহ ৬ পুলিশ ও এক সোর্সের বিরুদ্ধে।

আজ রোববার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. অলি উল্লাহর আদালতে সাইফের মা ছেনোয়ারা বেগম তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।  

আদালত সূত্র জানিয়েছে, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনারকে সহকারী পুলিশ কমিশনার পদের নিচে নয়— এমন কর্মকর্তাকে দিয়ে এর সত্যতা যাচাই করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে আদেশ দিয়েছেন।

সাইফুল নগর যুবদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তারা হলেন— বায়েজিদ বোস্তামী থানার সাবেক ওসি মো. কামরুজ্জামান, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মেহের অসীম দাশ, এসআই সাইফুল ইসলাম, এএসআই রবিউল ইসলাম, এসআই কেএম নাজিবুল ইসলাম তানভীর, এসআই নুর নবী এবং পুলিশ সোর্স মো. শাহাজাহান ওরফে আকাশ। এ ছাড়া, পুলিশের আরও ২ অজ্ঞাত পরিচয়ের এসআইকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযোগের বিবরণে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৬ জুন রাতে বায়েজিদ থানা পুলিশের সোর্স আকাশ সাইফুলকে ফোন করে দেখা করতে বলেন। আকাশ কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর সাইফুল তার সঙ্গে দেখা করতে রাজি হন এবং নগরীর অক্সিজেন মোড়ের হোটেল জামানে যান। সেখানে ওসি কামরুজ্জামানের সঙ্গে আরও কয়েকজন এসআই হোটেলের মধ্যেই সাইফুলকে আটক করেন এবং তার কাছ থেকে মোবাইল এবং মোটরবাইকের চাবি ছিনিয়ে তাকে নিচে নামিয়ে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যান।

অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রাইভেটকারে করে সাইফুলকে বায়েজিদ থানার ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়কে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওসির নির্দেশে এসআই মেহের অসীম সাইফুলের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তা না হলে তার 'ক্রসফায়ারের অর্ডার' আছে বলে জানান। কিন্ত সাইফুল তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে তাকে থানায় নিয়ে যেতে বলেন।

এক পর্যায়ে সাইফুলকে এসআই অসীম, এসআই সাইফুল এবং এসআই নাজিবুল মুখ বেঁধে গাড়ি থেকে নামিয়ে মাটিতে ফেলে দেন এবং ওসি তার পিস্তল থেকে সাইফুলের বাম পায়ে একটি গুলি করেন।

এস আই মেহের অসীমও পরে বাম পায়ে আরেকটি গুলি করেন। রক্তক্ষরণে সাইফুল অজ্ঞান হয়ে যান এবং পরদিন সকালে নিজেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি দেখতে পান। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জীবন বাঁচাতে তার বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলে দেন।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে বায়েজিদ থানার সাবেক ওসি কামরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাইফুল একজন প্রফেশনাল অপরাধী এবং ১৮টি মামলার আসামি। ঘটনার দিন বায়েজিদ লিংক রোডের এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটির সামনে তিনি পুলিশ দেখে গুলি ছুড়লে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। সেই ঘটনায় ৩ পুলিশও আহত হয়েছিলেন।'

`তার কাছ থেকে একটি এলজি উদ্ধার করা হয় সেই সময়', বলেন কামরুজ্জামান।

Comments

The Daily Star  | English

‘Polls delay risks return of autocracy’

Says Khandaker Mosharraf after meeting with Yunus; reiterates demand for election by Dec

1h ago