গ্রাম্য শালিসে নারীকে বেঁধে রেখে নির্যাতন, দোররা
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় গ্রাম্য শালিসে নারীকে বেঁধে রেখে নির্যাতন ও দোররা মারার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় গ্রাম প্রধানদের বিরুদ্ধে।
আপত্তিকর কাজের অভিযোগ এনে ওই নারী ও এক ব্যক্তিকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নির্যাতন করা হয়।
ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল মজিদ মামুন জানান, সকালে গ্রাম্য শালিসে তাদের ১০০ দোররা (বেত্রাঘাত) এবং জুতার মালা পরিয়ে দেন গ্রাম্য মাতব্বররা।
এরপর মোবাইল ফোনে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায় ভুক্তভোগী নারীকে জুতার মালা পড়িয়ে ঘোরানো হচ্ছে।
ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল মজিদ মামুন বলেন, গ্রাম্য মাতব্বরদের এই ধরনের বিচার বা জুতার মালা পড়িয়ে গ্রাম ঘোরানো দুঃখজনক ঘটনা।
পশ্চিম ভেংড়ি গ্রামের গ্রামপ্রধান ইনসাফ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বুধবার রাতে ভুক্তভোগী নারীকে বেঁধে রাখা হয়। সকালে দোররা মারার পর বেঁধে রাখা ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয় গ্রাম্য শালিসে। পরে জুতার মালা দেয়ার সিদ্ধান্ত দিলে আমি বিরোধীতা করি।
তিনি বলেন, পূর্ব ভেংড়ি গ্রামের প্রধান সাজাহান আলী, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, হান্নান আলীসহ আরও অনেকে বিচারক হিসাবে এই সিদ্ধান্ত দেন।
যোগাযোগ করা হলে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি মামলা হয়েছে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ওই নারীসহ ২ জনকে বেত্রাঘাত ও জুতার মালা পরানো হয়েছে। এ ঘটনায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নাটোর জেলা কমিটির আইনজীবী আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এই ঘটনায় মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। যদি ভুক্তভোগীরা কোনো অপরাধ করে থাকে তবে সেটা আইনের আওতায় আনার সুযোগ ছিল। তা না করে দোররা মারা বা জুতার মালা পড়িয়ে গুরুতর অপরাধ করা হয়েছে। মানবাধিকার কমিশন অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে ভুক্তভোগীকে আইনগত সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা করবে।
Comments