বিএনপি নেতা চাঁদকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে: পুলিশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তারের জন্য রাজশাহী জেলা পুলিশের বেশ কয়েকটি দল গতকাল সোমবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালেও অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকে এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
রাজশাহীর পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন মঙ্গলবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তাকে খুঁজে পাইনি। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।'
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চাঁদ বাড়িতে তার ফোন রেখে আত্মগোপনে চলে গেছেন।
রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে পুঠিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আজাদ অভিযোগ করেন, শুক্রবার শিবপুরহাট স্কুল মাঠে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের উপস্থিতিতে জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় সভার সভাপতি বিএনপি নেতা চাঁদ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠানো ছাড়া বিএনপির আর কোনো দাবি নেই এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন বিএনপি নেতা চাঁদ।
পরে নেত্রকোণা জেলার একটি আদালতে একই ধরনের আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।
একই সঙ্গে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়ায় চাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আওয়ামী লীগ ও এর অনুগত সংগঠনগুলো সোমবার বিকেলে চাঁদের বক্তব্যের প্রতিবাদে ও তার গ্রেপ্তার দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে বিকালে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে মিছিল বের হয়।
মিছিল শেষে সমাবেশে লিটন বলেন, 'বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদের বক্তব্য কোনো বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। সেই বক্তব্য এসেছে তারেক জিয়ার কাছ থেকে। এটি লন্ডন থেকে ওই বিএনপি নেতার মাথায় ঢোকানো হয়েছে।'
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু চাঁদের বক্তব্যকে 'অনিচ্ছাকৃত ভুল' আখ্যা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকদের ফোন করে তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক সভাগুলোতে ভাষণ দেওয়ার সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটে, ভুল হয়। অবিলম্বে চাঁদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল।'
মিনু আরও বলেন, 'চাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে তার দলের কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, এটাই বলার জন্য আমাদের দলের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে রয়েছে। কিন্তু চাঁদ আবেগের বশবর্তী হয়ে ভুল করেছে, তার জন্য আমি সবার কাছে ক্ষমা চাইছি।'
Comments