হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে এস আলমের আবেদন

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন বিরুদ্ধে বিদেশে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ তদন্তে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি আবেদন করা হয়েছে।

মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন তাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে সোমবার আপিল বিভাগে এই আবেদন জমা দিয়েছেন।

সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বলে ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপ কখনোই বিদেশে বিনিয়োগ বা তহবিল স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেয়নি।

পিটিশনকারীদের আইনজীবী মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আবেদনের শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেছেন।

আদালতে এস আলম গ্রুপের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন ও আহসানুল করিম এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন মিন্টু কুমার মণ্ডল।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনটি নজরে আনার পর শুনানি নিয়ে ৬ আগস্ট বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত লিজুর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেন।

প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে ২ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে বলা হয়।

বিদেশে অর্থ স্থানান্তরে এস আলম গ্রুপকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং বিএফআইইউ-এর প্রধানকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

বাংলাদেশে অফশোর ব্যাংকিংয়ের কোনো ব্যবস্থা আছে কি না; বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব কী এবং অফশোর ব্যাংকিং কীভাবে অর্থ পাচারে সহায়তা করে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে আদালতের প্রতিবেদন দাখিল করতেও তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে মানি লন্ডারিং রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনের অভিযোগ অনুসন্ধানে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন বেঞ্চে উপস্থাপন করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়ার পর আদালত এ আদেশ ও রুল জারি করেন।

হাইকোর্ট ডেইলি স্টার সম্পাদককে ১০ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা সম্পর্কে একটি হলফনামা জমা দিতে বলেছে এবং এই বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

7h ago