পুলিশ আমার স্বামীর অবস্থান জানার পরও ব্যবস্থা নেয়নি: মিলনের স্ত্রী

কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার মিলন হোসেনের স্ত্রী মিমু খাতুন (বামে)। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীর চর থেকে মিলন হোসেনের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর তার স্ত্রী দাবি করেছেন পুলিশ তার অবস্থান শনাক্ত করতে পারলেও তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়নি।

শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পদ্মার চরে অভিযান চালিয়ে মিলনের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মিলনের স্ত্রী মিমু খাতুন বলেন, গত বুধবার মিলন নিখোঁজ হওয়ার পর সন্ধ্যায় তিনি কুষ্টিয়া মডেল থানায় যান। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর মিলনের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোনো তদন্ত করেনি তারা।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গের সামনে কাঁদতে কাঁদতে মিমু বলেন, 'নিখোঁজ হওয়ার পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আমার স্বামীর ফোন চালু ছিল। আগের দিন সন্ধ্যায় থানায় গেছি। থানায় মিলনের ফোনের লোকেশনও দেখাইছে। আমার স্বামীর লাশ হওয়া পর্যন্ত এরা অপেক্ষা করছিল। যেয়ে যে একটু তদন্ত করবে, তা করেনি পুলিশ।'

তিনি জানান, ওই দিন সকাল ১১টার দিকে সজল নামে একজন ফোনে মিলনকে ডেকে নিয়ে যান। ১৫-২০ মিনিট পর ফেরার কথা থাকলেও মিলন না ফেরায় তিনি দুপুরে ফোন করেন। তখন মিলন বলেন, ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগবে। সেটাই মিলনের সঙ্গে শেষ কথা তার।

তবে পুলিশ বলছে, মিমু খাতুন জিডি করার আগেই মিলনকে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা এই তথ্য পেয়েছেন।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এ এইচ এম আবদুর রকিব বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি মিলনকে ফোনে ডেকে নেন কয়েকজন। সেদিনই মিলনের স্ত্রী থানায় জিডি করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ জানান, মিলনের স্ত্রীর জিডির পরিপ্রেক্ষিতে পরদিনই সজলকে আটক করা হয়। পরে প্রধান অভিযুক্ত সজীবসহ সন্দেহভাজন পাঁচ জনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সদর উপজেলার হাটশহরিপুর ইউনিয়নে পদ্মার চর থেকে চারটি গর্ত থেকে সাতটি ব্যাগে ৯-১০ টুকরো করে রাখা মিলনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মিমুর অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কোনো অভিযোগ পেলে আমরা গড়িমসি করি না। এক্ষেত্রেও যতদ্রুত সম্ভব কাজ করেছি। জিডি হওয়ার আগেই মিলনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।

পলাশ কান্তি নাথ আরও জানান, মিলন ও অভিযুক্ত সজল অনলাইনে যৌথভাবে ব্যবসা করতেন। ৩১ জানুয়ারি সকাল ১১টার দিকে মিলনকে অফিসে ডেকে নিয়ে আসেন সজল। সেখানে সজীবসহ আরও কয়েকজন আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন। তারা সেখানেই মিলনকে পিটিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার দিন রাতেই তার মরদেহ গড়াই নদী পার করে পদ্মার চরে নিয়ে যাওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago