চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত চিকিৎসক আইসিইউতে

এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
আহত চিকিৎসক কোরবান আলী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন এক চিকিৎসক।

গত শুক্রবার বন্দরনগরীর আকবরশাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

এই ঘটনায় আহত দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলীর (৬০) ছেলে আলী রেজা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। 

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের হামলা থেকে একজনকে বাঁচাতে চিকিৎসকের ছেলে রেজা ফোন করেছিলেন পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে। আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রেজার ওপর হামলা করে তারা। আর ছেলেকে হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে  হামলার শিকার হন চিকিৎসক কোরবান আলী।

চিকিৎসকের ছেলে আলী রেজা সাংবাদিকদের জানান, গত শুক্রবার বিকেলে পশ্চিম ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় দুই স্কুলশিক্ষার্থীকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মারধর করছিল। তিনি ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় ওই দুই শিক্ষার্থী তার কাছে সাহায্য চাইলে তিনি ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ এসে একজনকে ধরে নিয়ে যায়।

সেদিন সন্ধ্যায় ইফতারি কিনতে বাসা থেকে বের হন আলী রেজা। তখন তাকে একা পেয়ে মারধর করতে থাকেন কিশোর গ্যাং সদস্যরা। ছেলের ওপর হামলার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান বাবা। 

একপর্যায়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ইট দিয়ে বাবা কোরবান আলীর মাথায় আঘাত করে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে প্রথমে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আকবরশাহ থানা সূত্র জানায়, ওই কিশোর গ্যাংয়ের সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। 

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে গোলাম রসুল নিশানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও, তিনি রিসিভ করেননি।

ওসি গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযুক্ত সবাই নিশানের অনুসারী। নিশান নিজেও এই মামলার আসামি। পুলিশ মামলা রেকর্ড করে তদন্ত চালাচ্ছে। আহত চিকিৎসক বর্তমানে আইসিইউতে আছেন। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়েই তিনি হামলার শিকার হন।'

উল্লেখ্য, পুলিশ ও র‍্যাব চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের একটি তালিকা করেছে। নগর জুড়ে সক্রিয় আছে ২০০ কিশোর গ্যাং। এসব দলে ৫ থেকে ২০ জনের সদস্য আছে। কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা বা প্রশ্রয় দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬৪ জন 'বড় ভাই'।

Comments