এজেন্টের হাত ভেঙে নদীতে নিক্ষেপের হুমকি, ২ আ. লীগ নেতা আটক

গ্রেপ্তাররা হলেন সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়।
সরিষাবাড়ী
গ্রেপ্তার সাইদুল হাসান সাইদ ও খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকলে হাত, দাঁত ও চাপার হাড় ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপের হুমকিদাতা আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের (আনারস) নির্বাচনী পথসভায় সাইদুল হাসান বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তাদের জবান আমরা বন্ধ করে দেবো। আমরা আগামী ৮ মের নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকব, অন্য কোনো মার্কার কোনো এজেন্ট দিতে দেবো না। রফিক সাহেবকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আজকেই ঘোষণা দিলাম।'

তিনি প্রতিপক্ষের লোকদের হুঁশিয়ার করে বলেন, 'সাবধান হয়ে যান, আমাদের মাঝে অসন্তোষ ও হানাহানির চেষ্টা করবেন না। আপনাদের দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। যাদের দাঁত নেই, তাদের চাপার হাড্ডি ভেঙে দেওয়া হবে।'

এরপর পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় একই সভায় বলেন, 'অন্য কোনো মার্কার এজেন্ট কোনো কেন্দ্রে দিতে দেবো না। এজেন্ট দিলে তার হাত বাড়ি দিয়ে ভেঙে আমরা যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করব।'

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম।

এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে দুজন কর্মী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা উস্কানিমূলক ও হুমকিস্বরূপ। যা ২০১৬ এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিভিন্ন বিধান অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

একইসঙ্গে হুমকিদাতা দুজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সরিষাবাড়ী থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় আজ দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে পুলিশ সাইদুল হাসান সাইদ ও খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়কে গ্রেপ্তার করে।

বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়।

উল্লেখ্য, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী ছিলেন। এরমধ্যে পোগলদিঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন এবং জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মো. আব্দুল্লাহ্ নানা নাটকীয়তা শেষে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। শেষ পর্যন্ত রফিকুল ইসলাম (আনারস) ও তালেব উদ্দিন (দোয়াতকলম) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Dhakeshwari Temple Yunus speech

Want to build a Bangladesh where everyone's rights are ensured: Yunus

Seeking law enforcement's support during celebration a 'collective failure', he added

1h ago