চট্টগ্রামে ধাওয়া করে গাড়ির ভেতরে ২ জনকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া অ্যাক্সেস রোডে একটি প্রাইভেট কারের ভেতরে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার ভোরে গুলি চালানোর আগে মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তরা গাড়িটিকে আধঘণ্টা ধরে ধাওয়া করে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা হলেন গাড়িচালক বখতিয়ার হোসেন ওরফে মানিক (২৪) এবং চালকের পাশের সামনের সিটে বসা মো. আবদুল্লাহ (২৩)।
পুলিশ আরও জানায়, গাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় রবিউল ইসলাম রবিন (২৪) এবং মো. হৃদয় (২৩) নামে আরও দুজন আহত হয়েছেন।
পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল জাকির জানান, চারজনকে আনুমানিক রাত ৩টার দিকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বখতিয়ার ও মানিককে মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সুলতানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আমরা জোড়া খুনের পেছনের কারণ উদঘাটনে কাজ করছি।'
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানান সিএমপি ডিসি শাকিলা।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএমপির দুজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, নগরীর বায়েজিদ এলাকার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরওয়ার বাবলা গোলাগুলির সময় গাড়িতে ছিল, কিন্তু সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
আহত হৃদয়ও জানান, গাড়িটিতে মোট ছয়জনের মধ্যে সরওয়ারও ছিল।
চমেক হাসপাতালে ভর্তি হৃদয় দ্য ডেইলি স্টারকে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, তারা রাত ২টার দিকে কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু এলাকার কাছে একটি বালু উত্তোলনের জায়গা থেকে শহরের দিকে আসছিলেন। তিনি বলেন, যখন তারা মূল সড়কে পৌঁছান, তখন অন্তত চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে একদল দুর্বৃত্ত গুলি করতে করতে তাদের ধাওয়া করে।
হৃদয় জানান, একপর্যায়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে থাকা মানিক আহত হন এবং সামনে একটি পুলিশ টহল জিপ দেখে অ্যাক্সেস রোডের চান্দগাঁও প্রান্তে গাড়িটি থামান।
গাড়িটি সেখানে থামার সঙ্গে সঙ্গেই দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন দিক থেকে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। হৃদয় আরও বলেন, 'পেছনের সিটে থাকা আমরা চারজন গাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করলে রবিন এবং আমি আহত হই।'
তিনি জানান, সরওয়ার ও ইমন পালাতে সক্ষম হয়। সরওয়ারকে হত্যা করাই সম্ভবত তাদের লক্ষ্য ছিল।
অ্যাক্সেস রোডের শান্তিরবাজার এলাকায় বসবাসকারী রিকশাচালক মো. আওয়াল জানান, রাতে রিকশা চালানোর পর সোয়া ২টার দিকে তিনি বাড়িতে খেতে খাচ্ছিলেন। গুলির শব্দ শুনে তিনি বাইরে এসে দেখেন পাঁচটি মোটরসাইকেল দ্রুত গতিতে চান্দগাঁও এলাকার দিকে যাচ্ছে। আওয়াল আরও জানান, কিছুক্ষণ পর বাইকে থাকা দুর্বৃত্তরা একই পথে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, প্রতিটি বাইকে দুজন করে ছিল।
চকবাজার থানা পুলিশ প্রাইভেট কারটি জব্দ করেছে।
সকালে থানায় গিয়ে দেখা যায়, গাড়ির চালকের সিট রক্তে ভেজা এবং পেছনের উইন্ডশিল্ডে কয়েকটি ছিদ্র রয়েছে।
Comments